শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


বিবিদের সাথে কাটানো বিশ্বনবীর আনন্দঘন পাঁচ মুহূর্ত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : মুসলিমদের জীবনের সকল ফিলিংস এর আশ্রয়স্থল হলো আমার নবী। তার জীবনে কাটানো প্রতিটি মূহূর্ত আমাদের জন্য অনুসরণীয়। তার হাতে সংগঠিত সকল কাজ মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয়।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ তথা নীতিমালা।

স্বামী-স্ত্রীর মহব্বত কেমন হবে, দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক কেমন হবে, তার বিবরণ রয়েছে রাসুল সা.-এর পারিবারিক জীবনে।

মহানবী সা. বলতেন, তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম স্বামী যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে। আমি আমার স্ত্রীদের সাথে সবার চাইতে ভাল ব্যবহার করি।

আসুন রাসুল সা. এর বিবিদের সাথে কেমন আচরণ করতেন, তাদের সাথে কাটানো নবিজীর মূহূর্তগুলো কেমন ছিল- এমন  পাঁচটি মূহুর্ত সম্পর্কে জেনে আসি।

১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিবিদের সঙ্গে খেলাধূলা করতেন। একবার তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দিয়ে ইচ্ছা করে হেরে যান। কিছুদিন পর পুনরায় দৌঁড় প্রতিযোগিতায় হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হেরে যান। অতপর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! আজ আমি তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি, তুমি আমার সঙ্গে পারনি। এটা হলো প্রথম প্রতিযোগিতায় জিতে যাওয়ার বদলা।

২. মাঝে মাঝে বিবিদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনী ও আন্যান্য আলোচনা করতেন। সকল বিবিই পালাক্রমে নতুন নতুন কিসসা শুনাতেন, তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে নিজেও কিসসা শুনাতেন। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তিনি আমাদের মধ্যে এমনভাবে হাসতেন, কথা বলতেন ও বসে থাকতেন, আমাদের মনেই হতো না যে তিনি একজন মহান রাসুল।

৩. তিনি বিবিদের ভৎসনা, তিরস্কার করতেন না এবং তাদের সাথে কটাক্ষ ভাষায় কথা বলতেন না। বরং মায়া জড়ানো, মন জুড়ানো আকর্ষণীয় কথা ও ভাবভঙ্গি দিয়ে বুঝিয়ে দিতেন। তাদের কোনো কথা মনের বিপরীত হলে তাদের সে কথা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে অন্য চিন্তা করতেন। তিনি বিবিগণকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাদের চুমু দিতেন এবং কখনো কখনো তাদের উরুতে মাথা রেখে শুয়ে থাকতেন।

৪. রাসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের এতটা ভালোবাসতেন যে, হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা পাত্রের মুখে যে জায়গায় মুখ দিয়ে পানি পান করতেন, তিনিও সে জায়গায় মুখ দিয়েই পানি পান করতেন। আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাঁড়ের যে জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন হজরত আশয়া রাদিয়াল্লাহু আনহাও হাড়ের ঐ জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন।

৫. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত খুশি মনে মুচকি হাসতে হাসতে গৃহে প্রবেশ করতেন এবং দরদমাখা কণ্ঠে সালাম দিতেন। বিশ্রামের সময় বিছানার ব্যাপারে দোষ ধরতেন না, বিছানা যেভাবে পেতেন তার উপরই শুয়ে পড়তেন।

বিশ্বনবির দাম্পত্য জীবনের আলোকে বুঝা যায় যে, সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপনে স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে বিকল্প নেই। জীবনকে সুখ-শান্তি ও আনন্দময় করে তুলতে রাসুল সা.-এর অনুসরণ ও অনুকরণ আবশ্যক কর্তব্য।

আসুন আমরা দাম্পত্য জীবনকে সুখ-শান্তি ও আনন্দময় করে তুলতে হাদিসে রাসুলের অনুকরণ ও অনুসরণের করি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের প্রত্যেকের দাম্পত্য জীবনকে সুখ ও শান্তিময় করে গড়ে তুলতে রাসুল সা. দাম্পত্য জীবনের মতো করেই রাঙিয়ে নেয়া জরুরি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন।

তথ্যসূত্র : কুরআন মাজিদ, আবু দাউদ, তিরমিজি, উসওয়াতুন্নবী, আদাবুন্নবী ও সীরাতগ্রন্থ।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ