শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ভারতে নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্বে মুসলিম নারীরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ভারতের রাজধানী দিল্লির শাহিনবাগের খোলা নর্দমা আর বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে থাকা বিদ্যুতের তারের জঞ্জালের পাশে হিজাব পরিহিত শত শত মুসলমান নারীর অবস্থান। ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এখানে অবস্থান করছেন তারা।

২৪ ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে চলছে প্রতিবাদী গান আর সরকারবিরোধী স্লোগান। শাহিনবাগের নারীদের এই অবস্থান কর্মসূচি আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ছে ভারতের বিভিন্ন শহরে, স্থানীয় নারীরা নিজ নিজ এলাকায় একই ধরনের অবস্থান নিচ্ছেন।

শাহিনবাগের নারীদের ঘিরে রয়েছে অনেকগুলো পুলিশি ব্যারিকেড। তারপরেও বিভিন্ন পথ পেরিয়ে সন্তানদের সঙ্গে করে নিয়ে হাজির হচ্ছেন নারীরা। মাঝে মাঝে কবি আর গায়কেরা উঠে যাচ্ছেন অস্থায়ী মঞ্চে আর করতালি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করছেন অন্যরা।

রাত গভীর হলে গরম কম্বল গায়ে সস্তা মাদুরে গাদাগাদি করে ঘুমিয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। এদের মধ্যে রয়েছেন ৯০ বছরের বৃদ্ধারাও। মাঝে মাঝেই স্লোগান উঠছে, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, অর্থাৎ বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।

শাহিনবাগের মতো ভারতের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হওয়া নারীদের দাবি একটাই, বিতর্কিত সিএএ প্রত্যাহার। ওই আইনে প্রতিবেশী তিন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে বাদ যাবে মুসলমানেরা। ভারতজুড়ে বিভিন্ন ধর্ম ও মতের মানুষেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিতর্কিত এই আইনের প্রতিবাদ করছেন।

শাহিনবাগে জড়ো হওয়া প্রতিবাদকারীরা মনে করেন, নাগরিকত্ব আইনটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের দেশজুড়ে এনআরসি প্রণয়নের অংশ। তাদের আশঙ্কা, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে অনেককেই আটককেন্দ্র না হয় অন্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে আন্দোলনরত নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সহ-সভাপতি মাওলানা ড. কালিব সাদেক। গতকাল লাখনৌর ক্লকহাউস এলাকায়  ‘সিএএ’ ও ‘এনআরসি’ বিরোধী চলমান বিক্ষোভে নারীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

এসময় তিনি আন্দোলনরত নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই দেশে ঘৃণা ও জুলুমের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। আমাদের কাউকে ভয় পাবার প্রয়োজন নেই। আমি এখানকার সাহসী নারীদের সাধুবাদ জানাতে চাই।

তিনি আরও বলেন, রাতে এখানে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন করে দেওয়া হয়। এটা জুলুমেরই প্রমাণ বহন করে। অথচ নিরাপত্তা আমাদের অধিকার। জুলুম অত্যাচারের রাজত্ব বেশিদিন টিকেনা। কারণ এটা গণতন্ত্র,স্বৈরতন্ত্র নয়।

নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির অন্য নেতারা বারবার বলে আসছেন নতুন নাগরিকত্ব আইনে ভারতীয় নাগরিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। আর ভারতজুড়ে যদি এনআরসি প্রণয়ন করা হয় সেখানে ধর্মীয় বিভাজন করা হবে না।

আরএম/

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ