শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


কেশবপুরে দুধ দিয়ে ধুয়েমুছে আ'লীগ অফিস পরিষ্কার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: যশোরের কেশবপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গরুর দুধ দিয়ে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করেছেন যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া শাহীন চাকলাদারের অনুসারীরা।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচ তলার একটি কক্ষ থেকে থানা পুলিশ দেশীয় অস্ত্র ও ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধারের পর ওই কক্ষ দুধ দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। এরপর বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ অফিসও একইভাবে পরিষ্কার করা হয়।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, কেশবপুর শহরের পাঁজিয়া সড়ক সংলগ্ন উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচ তলায় কৃষক লীগের অফিসটি ২০১৪ সাল থেকে 'হাতুড়ি ও গামছা বাহিনী' দখলে নিয়ে মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, বাজার লুটসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।

তারা জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী করায় 'হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর সদস্যসহ তাদের গডফাদাররা' গা ঢাকা দেয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধোয়ামোছার সময় থানা পুলিশের উপস্থিতিতে 'হাতুড়ি বাহিনী'র দখলে থাকা কক্ষটি খোলা হয়। এ সময় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে ৪টি তলোয়ার, একটি কিরিচ ও ফেনসিডিলের ৭টি বোতল উদ্ধার করে। এরপর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ গরুর দুধ দিয়ে কক্ষটি ধুয়েমুছে ফেলে।

উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাবেয়া ইকবাল বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নে 'হাতুড়ি ও গামছা বাহিনী'র দখলে থাকা আওয়ামী লীগ কার্যালয়গুলো দখলমুক্ত করে গরুর দুধ দিয়ে ধুয়ে তাদের অপকর্মের পাপমোচন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন বলেন, গত ৬ বছরে আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকতে পারিনি। মঙ্গলবার অফিসে এসে দেখি থানা পুলিশ হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর দখলে থাকা কক্ষটির তালা খুলে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসহ ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার করেছে।

তিনি আরও বলেন, হাতুড়ি বাহিনীর প্রধান ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত খন্দকার আব্দুল আজিজ, গামছা বাহিনী প্রধান খন্দকার শরিফুল ইসলাম, আবু সাঈদ লাভলু, এস এম মাহাবুর রহমান, আলাল দিলু, ইমরান হোসেন, শেখ জামাল উদ্দীন, তানজিল আহমেদদের গডফাদার বিশ্বাস শহীদুজ্জামান শহীদের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ অফিস দখল করে মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন, বাজার লুটসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত।

রুহুল আমীন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কেশবপুর ও মনিরামপুর থানায় ডাকাতি, বাজার লুঠ, নারী নির্যাতন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাছের ঘের দখলের অসংখ্য মামলা রয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হতো। তাদের ভয়ে কেশবপুরবাসী ছিল আতঙ্কিত।

কেশবপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর