শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


সড়ক পরিবহন আইন শিথিল করায় দুর্ঘটনা বেড়েছে: ইলিয়াস কাঞ্চন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: পরিবহন চালক বিশেষ করে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ চালকদের বেপরোয়া মনোভাব সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) -এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

তিনি বলেন, পরিবহন চালকদের অন্যায্য দাবির মুখে নতুন সড়ক পরিবহন আইন শিথিল করায় চালকদের মধ্যে বেপরোয়া মনোভাব তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেসের ব্যাপারে তাদের ছাড় দেয়ায় আগে সড়কে যত মামলা হতো, যত টাকা জরিমানা হয়েছে,  নতুন আইন প্রয়োগ করার পরে মামলা ও জরিমানা কমে গেছে। এর ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।  এসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়ে গেছে।

আজ শনিবার নিসচার প্রচারসম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমানের সাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এবছরের শুরু থেকে সড়ক দুর্ঘটনা যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এতে আমি ও আমার সংগঠন খুবই উদ্বিগ্ন। দেশের মানুষও উদ্বিগ্ন। দুর্ঘটনা কেন হঠাৎ করে এতো বাড়লো সেটা অনুসন্ধান করতে গিয়ে গত জানুয়ারি থেকে ঘটা দুর্ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, যেসব গাড়ি সড়কে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে সেগুলোর মধ্যে ট্রাক, কাভার্ভভ্যান, পিকআপ ও ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস বেশি। ইদানীং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়েছে।

সড়ককে দুর্ঘটনা মুক্ত করতে জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ এবং এক্ষেত্রে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রতিজোর দিয়ে কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন তিনি।

সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়কে মোটরসাইকেলের সংখ্যা দিন দিন ব্যাপকহারে বাড়ছে।  চালকদের যথাযথ পরীক্ষার মাধ্যমে লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে কিনা, তারা ঠিকমতো ড্রাইভিং শিখছে কিনা এসব বিষয় উপেক্ষিত থাকছে। এর ফলে বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চলছে সড়কে। প্রত্যেক দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দেশে গড়ে ৬ থেকে ৭ জন মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস দুর্ঘটনাও বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, সড়কে গণপরিহন চলাচলে নজরদারি নেই সরকারের। বিআরটিএর লাইসেন্স ও ফিটনেস দেয়ার বিষয়টিতে নেই স্বচ্ছতা। এক মাসে আড়াই লাখ গাড়ির ফিটনেস দিয়েছে বিআরটিএ। কীভাবে এত অল্প সময়ে এত বেশি গাড়ির ফিটনেস সনদ দেয়া যায় সে বিষয়ে সরকারের এ সংস্থাটির কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি। একইসঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে যারা কাজ করে যেমন বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশ তাদের মধ্যেও অজ্ঞতা আছে। তাদের দক্ষতা, জানা ও আন্তরিকতার ঘাটতি আছে। তাদের মধ্যে দুর্নীতি আছে। পরিবহন সেক্টরে নের্তৃত্ব দেওয়া চালক ও মালিকরা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া জনগণ ও দেশের মানুষের কথা ভাবে না। তাদের এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক এলাকার ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্যদের উদ্যোগ নেয়া দরকার। মোটরসাইকেল, সাইকেল থেকে শুরু করে যত ধরনের যানবাহন সড়কে চলে সব চালকদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। এ সেক্টরে সরকারকে বরাদ্দ দিতে হবে। মানুষের জীবন বাঁচাতে, জাতিসংঘের এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে এ খাতে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে যে সংস্থাগুলো কাজ করে যেমন বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ