শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


শাবান মাসের রোজা ও তার ফজিলত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুসাইন মাহমুদ

শবে বরাতে কী আমল করবো: এবং তার রোযার সাথে মিলিয়ে শা'বান মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়্যামে বীজের রোযা রাখা উত্তম।

চলতি ২০২০ সনে শবে বরাত হচ্ছে ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত, সামনে অপেক্ষা করছে সর্বশ্রেষ্ঠ মাস রমজান। রমজানের আগাম প্রস্তুতির তাগাদা নিয়ে মহিমান্বিত "শাবান" ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত থাকেন। এ মাসে রয়েছে পবিত্র লাইলাতুল বরাত। শাবান মাসটিও বিভিন্ন বিবেচনায় গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ। শাবান মাস পবিত্র রমজানের প্রস্তুতি পর্ব।

হজরত মুহাম্মদ সা. শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতেন। রজব ও শাবানে তিনি রমজানের অধীর অপেক্ষায় থাকতেন। রমজানের আগমনের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতেন। হজরত আয়েশা রা.বর্ণনা করেন, হজরত রসূল সা. শাবান মাসের (দিন তারিখের হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ্য রাখতেন যা অন্য মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। (আবু দাউদ ১/২১৮)।

উম্মতকেও তিনি শাবান মাসের দিন তারিখের হিসাব রাখার গুরুত্বারোপ করেছেন। এ মাসে অধিক হারে নফল রোজা রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। শাবান মাসের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি রাত হচ্ছে শবে বরাত। হাদিসে এ রাতের ফজিলতের বিস্তারিত আলোচনা এসেছে।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, পনের শাবান রাতে (শবে বরাত) তোমরা জেগে থেকে ইবাদত কর। আর পরদিন রোজা রাখ। (মিশতাক ১১৫)।

হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে--
عَنْ ابْنِ مِلْحَانَ الْقَيْسِيِّ عَنْ أَبِيهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُنَا أَنْ نَصُومَ الْبِيضَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ وَخَمْسَ عَشْرَةَ قَالَ وَقَالَ هُنَّ كَهَيْئَةِ الدَّهْرِ
হযরত ইবনে মিলজান ক্বাইসী (রা.) স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে আইয়্যামে বীজ ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং তিনি বলেন, এ দিনগুলোর রোযা এক বছরের রোযার সমতুল্য।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪৪৯)

আরবি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখকে (চাঁদের পূর্ণতার ভিত্তিতে) "আইয়্যামে বীজ" বলা হয়। বিয শব্দের অর্থ উজ্জল। এ তিন রাতে চাঁদ বেশি উজ্জল থাকে তাই সেগুলোকে বীয বলা হয়েছে।
এ তিন দিন রোযা রাখা উত্তম।

আবু যর রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِذَا صُمْتَ شَيْئًا مِنَ الشَّهْرِ ، فَصُمْ ثَلَاثَ عَشْرَةَ ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ “প্রত্যেক মাসে কিছু (নফল) রোযা পালন করলে (চন্দ্র মাসের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো।” (তিরমিযীঃ ৭৬১, নাসায়ীঃ ২৪২৪)

প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা রাখার ফযীলত: প্রতি মাসে তিনটি করে নফল রোযা রাখা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ কাজ। চাই তা মাসের শুরুতে হোক, মাঝখানে হোক বা শেষে হোক। চাই লাগাতার রাখা হোক বা বিছিন্নভাবে রাখা হোক।

আবু দরদা রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ أوصاني خليلي بثلاث لا أدعهن حتى أموت صوم ثلاثة أيام من كل شهر وصلاة الضحى ونوم على وتر .
رواه البخاري ( ১১২৪ ) ومسلم(৭২১ ) “আমার প্রিয় বন্ধু (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে এমন তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন, যা আমি যতদিন বেঁচে থাকব, কখনোই ত্যাগ করব না। সেগুলো হচ্ছে: প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা পালন করা, চাশতের নামায পড়া এবং বিতির না পড়ে ঘুমাতে না যাওয়া।” (সহীহ মুসলিমঃ ৭২১)

আ’ব্দুল্লাহ ইবনে আ’মর ইবনে আ’স রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, صيام ثلاثة أيام من كل شهر صيام الدهر “প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখা, সারা বছর ধরে রোযা রাখার সমান।” (সহীহুল বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫)

আসুন আমরা পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতি নেই। যাতে রমজানের কাঙ্ক্ষিত ফজিলত লাভে আমরা ধন্য হতে পারি

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ