শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


রাখাইনে গণহত্যার তালিকা ও দলিল সংগ্রহ করছেন মুহিব্বুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যায় নিহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের তালিকা তৈরি করেছেন একদল রোহিঙ্গা। তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন মুহিব্বুল্লাহ।

কক্সবাজারে একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকেন তিনি। অন্যদের মতোই তিনিও সবকিছু হারিয়েছেন।

মুহিব্বুল্লাহসহ রোহিঙ্গাদের এ দলটি এমন কিছু করে দেখিয়েছে যা করতে পারেনি সাহায্য সংস্থা, বিদেশি সরকার কিংবা সাংবাদিকরা।

পলিথিনের ছাউনি ঘরে বসে গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের একটার পর একটা নাম ধারাবাহিকভাবে তারা লিখে রাখছেন। সঙ্গে নৃশংসতার অন্যান্য প্রমাণও নথিভুক্ত করছেন। যাতে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা যায়।

গত বছরের অক্টোবরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তথাকথিত ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু হয় যাতে ভয়াবহ নির্যাতন ও গণহত্যার মুখে পড়ে দেশটির মুসলিমরা। অভিযানে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। অপারেশনে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হন।

জানা যায়, মুহিব্বুল্লাহ নিহত মানুষদের তালিকা তৈরির কাজ করছেন। চূড়ান্ত হিসাব বলছে, সেনা অভিযানে ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এতে ২০১৬ সালের অক্টোবরের সহিংসতার হিসাবও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নিহতদের নাম, বয়স, বাবার নাম ও ঠিকানাভিত্তিক ক্যাটালগ তৈরি করা হচ্ছে। কীভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে, থাকছে লোমহর্ষক সে বর্ণনাও।

৪৩ বছর বয়সী মুহিব্বুল্লাহ মিডিয়াকে বলেন, আমি এখন একজন শরণার্থী। আমাকেও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ছাড়তে হয়েছে ঘর বাড়ি। তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নেই আমাদের কিছু করার রয়েছে।

ব্যবসা নিয়ে দুশ্চিন্তা আর নয়-  ক্লিক 

তার মতে, এ তালিকা গণহত্যার ঐতিহাসিক সাক্ষ্যপ্রমাণ হয়ে থাকবে। নতুবা একদিন সবাই তা ভুলে যাবে। তাই তালিকাটা জরুরি।

মুহিব্বুল্লাহ একসময় সাহায্যকর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি মংডু জেলায় নদীর পাশের গ্রাম তুলাতোলি গ্রামের একটি উদহারণ দেন। সেখানে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা মাত্র ৭৫০ জনের তালিকা পেয়েছি। আমরা পরিবারের পর পরিবার, নামের পর নাম ধরে এগিয়ে যাচ্ছি। অধিকাংশ তথ্য আসছে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের বেঁচে যাওয়া পরিবার সদস্যদের কাছ থেকে। কখনও প্রতিবেশীরাও তথ্য দিচ্ছেন।

মুহিব্বুল্লাহ বলেন, যখন কোনো নিহতের আত্মীয়স্বজনদের কাউকে খুঁজে পাই না, তখন পাশের গ্রামের লোকজনের সাহায্য নিই। এভাবে তথ্য ও বর্ণনা পেয়ে যাই।

তালিকা তৈরির কাজে নিয়োজিতকিউ প্যান ডু গ্রামের সাবেক প্রশাসক মুহাম্মদ রাফি বলেন, আমাদের লোকজনের অক্ষরজ্ঞান কম। সাক্ষাৎকার ও তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার সময় তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত উপায়েই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা পরিণতির দিকে যাচ্ছে কি আসামের ৪০ লাখ মুসলিম?

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ