শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


'আমরা কি ওদের মতো মারামারি করতে ইজতেমায় গিয়েছি?'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাসান আল মাহমুদ
আওয়ার ইসলাম

টঙ্গী মাঠের গেইট ভেঙ্গে এতআতি পন্থীরা সশস্ত্র হামলা করে মাঠে কাজরত, পাহাড়ারত, ইবাদাতরত, অবস্থানরত তাবলিগের নিরহী মুসল্লি, মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা যাকে পেয়েছে- সবাইকে।

আহতের সংখ্যা অসংখ্য, অগণিত এবং তার পরিসংখ্যান এখনো সুনির্দিষ্ট নয়। নিহতের সংখ্যা ১ জন জানা গেলেও এখনো স্পষ্ট নয়।

আজ ৩ ডিসেম্বর মধ্য দুপুরে সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর-১৪ জামেউল উলুম মাদরাসায় আহত ছাত্রদের দেখে এলাম। কারো মাথায়, কারো পায়ে, কারো হাতে এক বা একাধিক ব্যান্ডেজ বাঁধা। কারো শরীরে রয়েছে নানা আঘাতের চিহ্ন।

আহত ছাত্ররা আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আমাদের মাদরাসায় তাবলিগের কাজ নিয়মিত হয়। আমাদের মাদরাসা তাবলিগের এ অঞ্চলের মারকায। আমরা প্রতি বছরই আমাদের জামেউল উলুম থেকে ইজতেমার মাঠে কাজ করতে যাই। সে সুবাধে এ বছরও যাই।

তারা জানান, যেহেতু এ বছর তাবলিগের একটা বাতিল ফেরকা বিশ্ব ইজতেমাকে বানাচাল করতে নানা অপচেষ্টায় রত, তাই অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি এবার আমরা ছাত্ররা ইজতেমায় কাজ করতে যাই। আমাদের দেখে তাবলিগের মুসল্লিরা খুব খুশি হন।

তারা বলেন, আমরা ভাবতেও পারিনি, তাবলিগের বিদ্রোহী সাদগোষ্ঠীরা এতোটা উগ্র হয়ে ইজতেমা মাঠের মত একটা বিশ্ব সম্মেলন স্থলে এসে আমাদের উপর এভাবে আক্রমণ করবে! আমাদের ওপর অমানবিক আক্রমণ চালাবে।

এসময় আহত চাত্রদের গলা ভেঙ্গে আসে। তাদের চোখে অশ্রু টলোমল করতে থাকে। আহত ছাত্ররা অভিযোগের সুরে জানতে চান, আমরা কী দোষ করেছি, আমরা কি মারামারি করতে ইজতেমায় গিয়েছি!

আহত ছাত্রদের শারীরিক অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে জামেউল উলুম মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি রুহুল আমিনের রুমে যাই।

ছাত্রদের আপনারা এমন সংঘর্ষের ইজতেমায় কেন পাঠালেন? জানতে চাইলে তিনি জানান, তাবলিগ দ্বীন প্রচারের একটা বৃহৎ প্লাটফর্ম। কিন্তু এ প্লাটফর্মকে একটা চিহ্নিত গোষ্ঠী ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করতে তৎপর। আমাদের বাংলাদেশে হয় বিশ্ব ইজতেমা।

এ বিশ্ব ইজতেমাকে বানচাল করতে একটা বাতিল গোষ্ঠী পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব ইজতেমার মাঠে কাজ করতে প্রতি বছরই আমাদের ছাত্রদের সাথে আমরাও যাই। ছাত্ররা এমন পূণ্যের কাজে উৎসাহী হয়েই শরিক থাকে। সে হিসাবে এবারও যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসী এতাআতি গোষ্ঠীরা মুসল্লি ও ছাত্র-শিক্ষকের উপর নির্মমতা চালিয়ে অপপ্রচার করছে, মাদরাসা ছাত্রদের জোড় করে আনা হয়। দ্বীনের প্রতি মায়া থাকলে এসব বকওয়াজ করতো না।

তিনি বলেন, কোনো ছাত্রকে এতে বাধ্য করা হয়নি। সবাই স্বতঃস্ফূর্ত দ্বীনি কাজে সহযোগিতা করতে ইজতেমা মাঠের কাজে শরিক হয় এবং হয়েছে।

তিনি বলেন, তাবলিগেতো সংঘর্ষ নাই। কিন্তু ইজতেমা মাঠের গেইট ভেঙ্গে, প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে তাবলিগের বাতিল গোষ্ঠীরা এমন নির্মমতা চালাবে এটা কেউ কোনোদিন কল্পনাও করেনি।

তিনি বলেন, এতাআতি পন্থীরা বিশ্ব ইজতেমাকে বানচাল করতেই পরিকল্পিত এই হামলা চালিয়েছে।

কতজন ছাত্র আহত হয়েছে, তাদের চিকিৎসা কিভাবে হচ্ছে? এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জামেউল উলুম মাদরাসার শাইখুল হাদিস ও মুহতামিম মাওলানা আবুল বাশার নোমানী আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আমাদের ৬৫ জন ছাত্র আহত হয়েছে। কিছু আহত ছাত্র এখনো হাসপাতালে আছে।

কাউকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। কাউকে হাসপাতালের চিকিৎসা সারিয়ে মাদরাসার মেহমানখানায় রেখে আরোগ্যের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ইজতেমা মাঠে হামলায় সারাদেশে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ