শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


রমজানে লোকসভা নির্বাচনের তারিখে অসন্তোষ মুসলিম নেতাদের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: রমজান মাসে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় মুসলিম নেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রমজান মাসকে বাদ রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেই ভালো হতো বলে তারা মনে করছেন।

আগামী ৫ মে থেকে রমজান মাস শুরু হতে পারে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মে মাসের ৬, ১২ ও ১৯ তারিখ শেষ তিনদফার নির্বাচন হবে। এভাবে রমজানের মধ্যে নির্বাচন হওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে রোজা রেখেই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত সাত দফায় নির্বাচন হবে।

পশ্চিমবঙ্গের পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মতে, নির্বাচন হলো গণতন্ত্রের উৎসব। সব ধর্মকেই তৃণমূল সম্মান করে। কিন্তু এভাবে রমজান পর্যন্ত ভোট টেনে নিয়ে যাওয়া মোটেই ঠিক হয়নি।

দৈনিক ‘পুবের কলম’ পত্রিকার সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আহমদ হাসান ইমরান বলেন, ‘রমজান মাসে দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচনি তফসিল তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে মুসলিম ভোটার ও ভোট কর্মীদের ইবাদতে অবশ্যই অসুবিধা হবে।

দুর্গাপুজো কিংবা নবরাত্রির সময়েও ভোট অনুষ্ঠান করা উচিত নয়। নাগরিকদের ধর্মীয় চেতনাকে অবশ্যই মর্যাদা দিতে হবে।’

রমজান মাসে নির্বাচন প্রসঙ্গে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘ভোট গণতন্ত্রের একটা উৎসব। এই উৎসব রমজান মাসে হওয়ার কারণে সাধারণ ভোটকর্মী থেকে শুরু করে ভোটদাতা, ভোট প্রচারকসহ সবার জন্যই একটা বাড়তি সমস্যা তৈরি করবে। আমরা আগেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিলাম যাতে রমজান মাস ও শুক্রবারকে (জুমাবার) যেন ভোটগ্রহণের দিন থেকে বাইরে রাখা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা গেলো, জুমাবারকে ভোটগ্রহণের দিন থেকে বাইরে রাখা হলেও রমজান মাসের মধ্যে কয়েক দফা ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। এটা না করলেই আমরা খুশি হতাম। এজন্য সাধারণ মানুষকে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। গণতন্ত্রের এই উৎসবে রোজাদারদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল হওয়ার ক্ষেত্রে একটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। আমার আশঙ্কা এর ফলে ভোট প্রয়োগের শতাংশের হার কমে যেতে পারে।’

সিপিএম নেতা ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিমের মতে, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী মুসলিমদের ‘ইমোশন’-এ গুরুত্ব দেন না। প্রধানমন্ত্রী মুসলিম সম্প্রদায়কে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্যই রমজানের মধ্যে নির্বাচন করাচ্ছেন। আগে চক্ষুলজ্জা ছিল, এখন তাও চলে গেছে। রমজান মাসে নির্বাচন হওয়ায় ভোট প্রচারের সমস্যাও হবে। রমজান মাসে নির্বাচন না করলেই পারত।’

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার ঐতিহ্যবাহী নাখোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিক কাশেমি বলেন, ‘রমজান মাস ত্যাগ ও তিতিক্ষার মাস। এই মাসে নির্বাচন করা উচিত হয়নি। এতে রোজাদারদের অসুবিধা হবে।’

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও উত্তর ২৪ পরগণা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ এ কে এম ফারহাদ বলেন, ‘রমজান মাসে কেন নির্বাচন রাখা হল? এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ভাবা উচিত ছিল। এর ফলে রোজাদারদের অসুবিধায় পড়তে হবে।’

বিধায়ক ডা. এম নূরুজ্জামান বলেন, ‘রমজান মাসে ভোট হলে স্বাভাবিকভাবে মুসলিম সমাজে কিছু সমস্যা দেখা দেবে। রাজ্য সাত দফায় নির্বাচন না করে রমজান মাসের আগেই নির্বাচন শেষ করা উচিত ছিল।’

কেপি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ