শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


কিশোরগঞ্জে ইয়াবা সম্রাট শ্যামলকে গণধোলাই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলাধীন ছিলনী গ্রামের পার্শ্ববর্তী পাড়া নুরপুরে দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবাসহ যাবতীয় মাদক দ্রব্যের ব্যবসা চলে আসছিল। আর এই ব্যবসার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ছিল শ্যামলের।

হাওর অধ্যুষিত এলাকায় এভাবে প্রকাশ্যে ইয়বা ব্যবসা করার ফলে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে সামাজিক অবক্ষয় দেখা দেয়। উঠতি বয়সের তরুণেরা মাদকদ্রব্য খুব সহজেই হাতের নাগালে পাওয়ায় তাদের চারিত্রিক অবক্ষয় বাড়তে থাকে। সমাজের মানুষ প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের উপর নির্যাতন চালাত ইয়াবা সম্রাট পেশাদার চোর শ্যামল মিয়া। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এক প্রকার দিশেহারা গোটা গ্রামবাসী৷

জানা যায়, গতকাল বুধবার (২০ মার্চ) আনুমানিক রাত নয়টায় ছিলনী গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান রুকেলের বাড়িতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইটনা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সরকারি কলেজের সাবেক প্রতিষ্টাতা অধ্যক্ষ চৌধুরী কামরুল হাসানের নির্বাচনী উঠান বৈঠক করছিল গ্রামবাসী। বৈঠক চলাকালে ইয়াবা সম্রাট শ্যামল মদ্যপান অবস্থায় উঠান বৈঠকে এসে গ্রামবাসী এবং নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ শুরু করে৷ একপর্যায়ে গ্রামবাসী তাকে গণধোলাই দিতে বাধ্য হয়।

তারপর ইয়াবাসম্রাট শ্যামল আহত হলে তাকে দ্রুত ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আওয়ামীলীগ নেতা মুহা. সোনালী মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি গনমাধ্যমকে জানান শ্যামল একজন পেশাদার চোর এবং মাদক ব্যবসায়ী৷ তার অত্যাচারে শিকার হয়নি এমন মানুষ অত্র এলাকায় খুব কম।

গতকাল আমাদের উঠান বৈঠকে মদ্যপান অবস্থায় এসে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ শুরু করলে গ্রামবাসী এটা মেনে নিতে পারেনি৷ ফলে তাকে গণধোলাই দিতে বাধ্য হয়৷

৭নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা এমরান মিয়া তার ব্যাপারে জানান শ্যামলের অত্যাচার এবং সাধারণ মানুষের সাথে অতি মাত্রায় দুর্ব্যবহারের কারণে গ্রামবাসী তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে এবং খারাপ আচরণের ফলে তাকে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় আশে পাশের প্রত্যেক এলাকার লোকজনের কাছে সে ইয়াবা সম্রাট হিসেবেই পরিচিত।তার দুই ছোট ভাই সাদেক, সজীব ওরফে লেবার সর্দার সজীবও চুরি এবং ইয়াবাসহ একাধিক মামলার আসামী।

বর্তমানে মাদকের মামলায় সাদেকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী রয়েছে।তাদের বিরুদ্ধে চুরি ও মাদক ব্যবসার কারনে ইটনা থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে৷

আরো জানা যায়, শ্যামল এলংজুড়ী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের নেতা বলে পরিচয় দিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন যাবৎ। ঘটনার পর তার সহচররা তাকে আওয়ামী লীগ নেতা বলে প্রচার শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।

সকাশ ঠাকুর নামক এক ব্যক্তি তাকে বর্তমান ইটনা উপজেলার এলংজুড়ী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা বলে উল্লেখ করেন। একই কথা প্রচার করতে দেখা যায় কবির মিয়া ও মনির আদনান নামক ফেসবুক ব্যবহারকারীকেও।

এলংজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব মুহা. এরশাদ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মুহা. সরাফত আলী বলেন, শ্যামল বর্তমান এলংজুরী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক তো দূরের কথা সে ওয়ার্ডের সদস্য পদেও নাই।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে যে বা যারা তার সহযোগী হয়ে এমন মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রচার করছে সেটি ভুয়া, ভিক্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

আরআর


সম্পর্কিত খবর