শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


উচ্চ বা তেজস্বীকণ্ঠে ওয়াজ কি ক্ষতিকর?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি আবু বকর সিরাজী
লেখক ও শিক্ষক

কুরআন উপদেশের উৎস। মানবজাতিকে আলোর সন্ধান দিতেই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। হেরা গুহায় অবতীর্ণ আলোকবর্তিকাটি মানবজাতির জীবনকে আলোকস্নাত করেছিল নবীজির মাধ্যমে। তিনি কুরআনের মর্মকে মানবজাতির দোরগোড়ায় পৌঁছিয়েছেন তাঁর নবুওয়াতসুলভ মাধুর্যতায়।

কুরআন একটি সামগ্রিক গ্রন্থ। এর বিষয়বস্তু সীমিত নয়। অলৌকিকতাও খণ্ডিত নয়। কোনো যুগ, সময় বা কালের প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হয় না এবং হবেও না। কুরআনের জ্যোতি, এর জ্ঞান-বিজ্ঞান ও আদেশ-উপদেশের পরিধি বিস্তৃত।

যেহেতু কুরআনের বিষয়বস্তু সীমিত নয়, বরং অতীত-বর্তমান, ইহকাল-পরকাল, জান্নাত-জাহান্নাম, আদেশ-নিষেধ ও আশা-ভীতি সর্বপ্রকার আলোচ্য বিষয় সমৃদ্ধ মহাগ্রন্থ এই আল কুরআন, তাই কুরআনের ‘তরজুমান’ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মানবজাতির সামনে তুলে কুরআনের মর্ম তুলে ধরেছিলেন ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে, ভিন্ন ভিন্ন উপায় ও পন্থা অবলম্বন করে।

সাহাবাগণের সামনে আলোচনা করতে গিয়ে কখনও মুচকি হেসেছেন, কখনও মৃদ কৌতুক করেছেন, কখনও পরকালের অসীম নেয়ামতরাজির কথা বলে উদ্দীপ্ত করে জীবন উৎসর্গ করতে অনুপ্রাণিত করেছেন, জান্নাত-জাহান্নামের আলোচনা করতে গিয়ে কখনও দুই চোখ অশ্রু প্লাবিত করেছেন। কখনও আবার রাগান্বিত হয়েছেন এবং অত্যন্ত বলিষ্ঠ স্বর ও তেজস্বি কণ্ঠে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

বস্তুত সমাজ সচেতন ও দরদী বক্তার বৈশিষ্ট্য হলো সময়, স্থান, পরিস্থিতি, শ্রোতা, বক্তৃতার বিষয় ও প্রেক্ষাপট অনুযায়ী কথা বলবেন। এতে যদি স্বর উঁচু ও তেজি হয় তবে তা নবীজির স্পষ্ট সুন্নাতের অনুসরণ। দেখুন সহীহ মুসলিমের নিম্নের হাদিসটি-

وَحَدَّثَنِى مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا خَطَبَ احْمَرَّتْ عَيْنَاهُ وَعَلاَ صَوْتُهُ وَاشْتَدَّ غَضَبُهُ حَتَّى كَأَنَّهُ مُنْذِرُ جَيْشٍ

‘হাম্মাদ ইবনুল মুসান্না রহ. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুতবা দিতেন তখন তার চক্ষুদ্বয় রক্তিমবর্ণ, স্বর উঁচু হত এবং কঠোর রাগ প্রকাশ পেত।’ সহীহ মুসলিম : হাদিস নং ২০৪২

কাজী ইয়াজ রহ. বলিষ্ঠ স্বরে বক্তৃতা প্রদান করা সম্পর্কে বলেন, وهذا شأن المنذر المخوف ويحتمل أنه لنهي خولف فيه شرعه

‘বলিষ্ঠ স্বর ও উচ্চকিত কণ্ঠে শ্রোতা ও জনগণকে সচেতন করাই হলো ভীতিপ্রদর্শনকারী ও সজাগকারী বক্তার অনন্য বৈশিষ্ট্য। অথবা নবীজি বলিষ্ঠ স্বর ও উত্তেজিত কণ্ঠে ওয়াজ করেছিলেন শরিয়তের কোনো বিধান লঙ্ঘিত হতে দেখে।’ আত-তানবীর : ৮/৩৭৬

হাদিসশাস্ত্রে কাজি ঈয়াজ রা.-এর গ্রহণযোগ্যতা নতুন করে বলার কিছু নেই। তিনি হাদিসের অত্যন্ত দ্ব্যর্থহীন ব্যাখ্যা পেশ করেছেন।

তিনি বলছেন, দুটি কারণে বক্তা বক্তৃতা প্রদানের সময় উত্তেজিত ও স্বর বলিষ্ঠ করতে পারেন। এক. যখন কোনো জাতিকে জাগ্রত ও অশুভ পরিণামের ভয় দেখানো হয় তখন। দুই. শরিয়তবিরোধী কোনো কাজকর্ম সংঘটিত হতে দেখলে। বস্তুত এটাই একজন মুমিন ও আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন বক্তার অনন্য বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত।

শরিয়তবিরোধী কর্মকাণ্ড হতে দেখেও যদি একজন বক্তার কথায় তেজস্বিতা না থাকে, তখনও যদি স্বর অবনমিত থাকে, তবে তিনি কখনও একটি জাতিকে জাগ্রত করতে পারবেন না।

আল্লামা নববী রহ. হাদিসের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন- يستدل به على أنه يستحب للخطيب أن يفخم أمر الخطبة ويرفع صوته ويجزل كلامه

আলোচ্য হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, খতিব ও বক্তার জন্য উচিত হলো বক্তৃতার বিষয়কে গুরুগম্ভীর করে তোলা এবং স্বর উচ্চ করা। শ্রোতাদের কানে বিশুদ্ধ ভাষায় শব্দের ঝংকার সৃষ্টি করা। {শরহু মুসলিম : ৭/৪২}

ইমাম নববী রহ.-এর উল্লিখিত يجزل كلامه বাক্যের يجزل শব্দের উৎস হলো جزل শব্দ। শব্দটির একাধিক অর্থ আছে। তবে তিনটি অর্থ প্রসিদ্ধ। এক. صَاحَ তথা চিৎকার ও স্বর বলিষ্ঠ করা। দুই. غَلُظَ তথা কঠোর, কর্কশ ও শক্ত হওয়া। তিন. فَصُحَ তথা বিশুদ্ধ ভাষায় কথা বলা।

সুতরাং কোনো বক্তা যদি বিশুদ্ধ ভাষায় উচ্চকণ্ঠে এবং পরিস্থিতির কারণে শক্ত ভাষায় কথা বলেন, তবে তা আদৌ সুন্নাতের পরিপন্থী নয়, বরং ইমাম নববী রহ.-এর ভাষ্যানুযায়ী তা মুস্তাহাবও বটে।

আল্লামা উসাইমিন রহ. বলেন- وإنما كان يفعل هذا لأنه أقوى في التأثير على السامع ، فكان صلى الله عليه وسلم يكون على هذه الحال للمصلحة

নবীজি উত্তেজিত ও বলিষ্ঠ কণ্ঠে কথা বলেছিলেন একারণে যে, তা শ্রোতাদের অন্তরে গভীর দাগ কাটে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত এই অবস্থায় এভাবেই কথা বলাকে কল্যাণকর মনে করেছেন। {শরহে রিয়াদুস সালেহীন : ১৯/৬}

আমি আগেই বলেছি, কুরআন-হাদিসে মানবজাতির সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে। যে কোনো বিষয় ও যে কোনো পরিস্থিতির সমাধান দানে কুরআন-হাদিস সম্পূর্ণ সফল ও সক্ষম। তাই পরিস্থিতিই বলে দেবে কুরআনের ব্যাখ্যাকারক ভাষার কোন পথটা বেছে নেবেন।

কখনও কোমলতা, কখনও চোখ ভেজানো নম্রস্বর আবার কখনও বাতিলের প্রভাব ও আধিক্য দেখে শ্রোতাদের ঘুমভাঙানি বলিষ্ঠ স্বর- সবই কল্যাণকামী ও সচেতন বক্তার অনন্য বৈশিষ্ট্যের অংশ।

সুতরাং যারা উচ্চ কণ্ঠের এবং তেজস্বী বয়ান বরদাশত করতে পারছেন না, তারা হয়ত ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে তা পারছেন না নতুবা নবীজির জীবন, হাদিস ও এ সংক্রান্ত ইলম নেই। নবীজির জীবনী ও সিরাত পড়ার পরামর্শ দেন, অথচ সহীহ মুসলিমের মতো এই হাদিসটিই তার নজরে পড়ে না!

হাদিসে এটাও আছে, ‘নবীজি শ্রোতাদের বিরক্ত উদ্রেক করে, এভাবে উপদেশ দিতেন না।’

শ্রোতার বিরক্তির কারণ হয় নানা কারণে। দৃষ্টান্তস্বরূপ তার একটি হলো, রসাতলে ডুবতে থাকা সমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে তাসাউফের কোমল কিছু কথা শুনিয়ে তার প্রতিরোধশক্তি নিস্ক্রিয় করে দেয়া, আত্মভোলা জাতিতে পরিণত করা। এ কারণে নবীজির বিদায় হজের ভাষণ আর উহুদ যুদ্ধে রওয়ানা হওয়ার ভাষণ একই কণ্ঠের ছিল না।

কখনও তাঁর কণ্ঠে কোমলতার মুক্তা ঝরেছে, কখনও আবার তেজিস্বতার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ প্রবাহিত হয়েছে। আল্লামা রামলী রহ. বলেন- ويسن أن تكون الخطبة بليغة أي فصيحة جزلة، لأنه أوقع في القلوب ‘বক্তার জন্য সুন্নাত হলো তার বক্তৃতা বিশুদ্ধভাষায় উচ্চকিতকণ্ঠে হওয়া। কেননা এটা হৃদয়ে বেশি দাগ কাটে ও প্রভাব ফেলে।’ {নিহায়াতুল মুহতাজ : ২/৩২৬}

জুবায়ের ইবনুল আওয়াম রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাদের সামনে ভাষণ দিতেন, তখন মনে হতো তিনি কোনো সৈন্যবাহিনীকে ভাষণ দিচ্ছেন।’ {তাহজিবুল আছার : পৃ. ৪৮৯}

আর সৈন্যবাহিনীকে কোমল স্বরে নয়, উচ্চকিত কণ্ঠেই ভাষণ দিতে হয় তা বলাইবাহুল্য। নুমান ইবনে বশির (রা.) বলেন- عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ: أُنْذِرُكُمُ النَّارَ حَتَّى لَوْ كَانَ فِي مَكَانِي هَذَا لَأَسْمَعَ أَهْلَ السُّوقِ

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিম্বারে বক্তৃতা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের জাহান্নামের ভয় দেখাচ্ছি। আর তিনি এত উচ্চস্বরে কথা বলেছেন যে, তিনি যদি আমার এই স্থানে থাকতেন তবে বাজারের লোকেরাও তা শুনতে পেত। {মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : হাদিস নং ৩৪১৩৬}

জুবায়ের রা. আরও বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি একেবারে বাজারের শেষমাথায় থাকত তবু নবীজির উচ্চকিত ও বলিষ্ঠ কণ্ঠের সেই ভাষণ শুনতে পেত।

তাহজিবুল আছারের গ্রন্থকার বলেন لكل خاطب خطب بالناس في يوم جمعة أو عيد وما أشبه ذلك أن يجهر صوته ويسمع صوته من حضره اقتداء برسول الله صلى الله عليه وسلم

এসব হাদিসের আলোকে প্রমাণিত হয়, যেসব বক্তা বা খতিব মসজিদের মিম্বারে কিংবা ঈদগাহে অথবা ওয়াজের মঞ্চে ওয়াজ করেন, তারা উচ্চস্বরে কথা বলবেন। স্বর বুলন্দ করার কারণে শ্রোতাদের অন্তরে রেখাপাতও করবে এমনিভাবে যারা দূরে আছে তারাও শুনতে পাবে।’ {তাহজিবুল আছার : পৃ. ৪৯০}

বক্তার গ্রহণযোগ্যতার মূল বিষয় হলো শ্রোতারা তার কথায় উপকৃত হচ্ছে কিনা সেটা লক্ষ করা। শ্রোতারা যদি উপকৃত হন, হৃদয়কে উপদেশ দ্বারা সমৃদ্ধ করেন এবং সে অনুযায়ী আমল করতে অনুপ্রাণিত হন, তবে তিনিই সফল বক্তা।

ইমাম গাজালি রহ. বলেন- وليس كل من ادعى العلم أصبح واعظا، فالوعظ زكاة نصابها الاتعاظ، ومن لا نصاب له كيف يخرج الزكاة؟

‘সব আহলে ইলমই সফল বক্তা হতে পারে না। বক্তৃতা জাকাতের ন্যায়। এর নেসাব হলো উপদেশ প্রদানে সফলতা। যে ব্যক্তির কাছে নেসাব নেই অর্থাৎ তার কথায় মানুষ উপকৃত হয় না, সে কীভাবে জাকাত আদায় করবে?’

ইমাম গাজালি রহ.-এর এই কথাতেও কিন্তু সফল ও ব্যর্থ বক্তার পরিচয় ফুঠে উঠে স্পষ্টভাবে।

তবে আজকাল বক্তৃতার মঞ্চে বহু রঙ-তামাশা ও কৌতুক হয়, তা অস্বীকার করার অবকাশ নেই। কোনো কোনো ইউটিউব চ্যানেলে ভেসে ওঠে- ‘মঞ্চে মমতাজের গান গাইলেন অমুক বক্তা’, ‘দম ফাটানো হাসির ওয়াজ’, ‘নতুন চমক, বিয়ে বাড়ির গীত হাসির ওয়াজ’, ‘নতুন ধারায় কৌতুক ওয়াজ’ ইত্যাদি।

নিঃসন্দেহে এসব পন্থা ওয়াজ ও মিম্বারের মর্যাদাকে চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করছে। এর দ্বারা মানুষ বরং দিকভ্রান্ত হচ্ছে এবং ইসলামকে কৌতুকের ন্যায় তাচ্ছিলের বিষয় বলে মনে করতে বাধ্য হচ্ছে।

একারণেই আলী রা. বলতেন- حَدِّثُوا النَّاسَ، بِمَا يَعْرِفُونَ أَتُحِبُّونَ أَنْ يُكَذَّبَ، اللَّهُ وَرَسُولُهُ

‘শ্রোতাদের সামনে তাদের পরিচিত ভাষাতেই কথা বলো। তোমরা কি চাও যে, লোকেরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করুক?’ {বুখারী : হাদিস ১২৭}

পরিশেষে বলতে চাই, ওয়ায়েজগণ কুরআন-হাদিসের ভাষ্যকার। পৃথিবীতে বাংলাদেশই সম্ভবত একমাত্র দেশ, যেখানে বক্তা ও আয়োজকগণ উন্মুক্তভাবে যখন তখন ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করতে পারেন এবং সর্বসাধারণের সামনে বক্তারা সরাসরি ইসলামের কথা তুলে ধরতে পারেন।

এটা আলেমদের ও আহলে ইসলামের জন্য কত বড় শক্তি তা অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে সহজেই বুঝে আসবে। এই বক্তাদেরও উচিত এই সুযোগটির কদর ও মূল্যায়ন করা, সমালোচকদেরও উচিত, ইসলামের কল্যাণে উন্মুক্ত এই ব্যবস্থাপনাকে অযাচিত সমালোচনা দ্বারা প্রশ্নবিদ্ধ না করা।

সমালোচনার ময়দানে ‘হাতিবু লায়লিন’ নামে একটি কথা খুব প্রসিদ্ধ। অর্থাৎ ‘রাতের লাকড়ি সংগ্রাহক।’ রাতের লাকড়ি সংগ্রাহক যেমন অন্ধকারের কারণে কোনটা লাকড়ি আর কোনটা সাপ তা বুঝতে পারে না, তাই লাকড়ির সঙ্গে সাপও তুলে নেয়, ঠিকতদ্রুপ সমালোচক যদি অবিবেচক, পরশ্রীকাতর, অপরিপক্ক কিংবা সমালোচনার মাপকাঠি সম্পর্কে অজ্ঞ হয়, তবে তার সমালোচনায় ভালোমন্দের তারতম্য থাকে না।

আমরা লেখালেখিতে একসময় দৈন্যতার মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম। সেই অবস্থা কিছুটা কেটেছে, যা আশার সংবাদ। কিন্তু দৈন্যতা কমে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের হীনমন্যতা বেড়েছে। আমরা বামপাড়ার মহীরুহের দিকে মাথা তুলে তাকাতে গিয়ে কখন নিজের স্বকীয়তা হারিয়েছি তা টেরও পাইনি। তাদের সমকক্ষতা অর্জনের জন্য কখন যে বামদের সঙ্গে দ্রবীভূত হয়েছি তাও টের পাইনি।

তাই যেসব পত্রিকা-পোর্টালে আহলে ইসলামকে মৌলবাদ, জঙ্গী বলে হরদম গলা ফাটায় তাদের পত্রিকা-পোর্টালে যখন আমাদের সমালোচনার বিষয় ছাপায়, তখন তাদের উদ্দেশ্যে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

সমালোচনা শত্রুর টেবিলে না করে নিজেদের চা-কফির দস্তরখানে হোক, তবেই একে অপরের প্রতি কল্যাণকামিতার প্রকৃত চর্চা দৃশ্যমান হবে।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ