শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


নুসরাত হত্যা: আগুন দেয়ার সময় পা চেপে ধরেন বান্ধবী পপি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার সময় তার বান্ধবী পপি রাফির পা চেপে ধরে। আগুন দেয়ার সময় খুনিরা পপিকে শম্পা নামে ডাকে। সরাসরি হত্যাকাণ্ডে পাঁচজন অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের তদন্তকারীরা।

গলা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীরে ঢালা হয় ১ লিটার কেরোসিন। কেরোসিন ঢালে জাবেদ, আগুন দেয় জোবায়ের। এখন পর্যন্ত ১৯ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। কিলিং মিশনে ছিল পাঁচজন। খুনিদের ১০ হাজার টাকা দেয় মাকসুদ এবং ৭০ টাকা দিয়ে এক লিটার কেরোসিন কেনেন শাহাদাত । এ হত্যা ঘটনায় সেই শম্পা (পপি)সহ তিনজন গ্রেফতার।

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় ‘সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে’ আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এজাহারভুক্ত দুই আসামি নূরউদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম।

ওদিকে নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি সোনাগাজী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মকছুদ আলমকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহম্মেদ গতকাল এ আদেশ দেন।

মামলার বাদী অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু জানান, রবিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া নূরউদ্দিন ও শামীমের বক্তব্যে কাউন্সিলর মকছুদ আলমের নাম রয়েছে। তিনি এ ঘটনায় অর্থ জোগানদাতা।

আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে গত ৯ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালত নূরউদ্দিন, কেফায়াত উল্যাহ, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরদিন ১০ এপ্রিল অধ্যক্ষ এসএম সিরাজউদ্দৌলাকে সাত দিন, আবছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন একই আদালতের বিচারক। ১১ এপ্রিল উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন একই আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহম্মেদ।

১৩ এপ্রিল শনিবার মামলার আরেক আসামি জাবেদ হোসেনকে সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন।

এদিকে রবিবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আসামি নূরউদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম বলেছেন, অধ্যক্ষ সিরাজউদদ্দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পদির্শক (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, রাফি কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয় ৫ জন, অন্যরা তাদের সহযোগিতা করে। এদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি একজনকে গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে।

গত ১৪ এপ্রিল ঘরে তালা দিয়ে লাপাত্তা হয়েছে নুসরাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার পরিবার। বাড়িটির নাম ‘ফেরদৌস মঞ্জিল’। ফেনী পৌর এলাকার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী বাড়ি সড়ক। শহরের পাঠানবাড়ী রোড ধরে চৌধুরীবাড়ি হয়ে সড়কটি চলে গেছে মহিপাল পর্যন্ত। এখানকার মকছুদুর রহমান সড়কের একটি বাইলেনের একেবারে শেষপ্রান্তে সিরাজের বাড়ি।

নুসরাত জাহান রাফির পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে নুসরাত জাহান রাফি স্মৃতি ফাউন্ডেশনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ