শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

নিজ হাতে প্লেন বানালেন পাকিস্তানের এই পপকর্ন বিক্রেতা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: পড়াশোনা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত; অভাবের তাড়নায় এর বেশি আর তা এগোয়নি। বিমানবাহিনীতে যোগদানের স্বপ্নটাও বাস্তব হয়নি। তবে আশা ছাড়েননি মুহাম্মদ ফৈয়াজ।

ডানা মেলে আকাশে ওড়ার যে লক্ষ্যটা সেই ছেলেবেলা থেকে নিজের ভাবনায়, স্বপ্নে গেঁথে এসেছেন ফৈয়াজ, তাকে একটা কাঠামো তো দিতেই হবে! বছর বত্রিশের এই যুবক তাই নিজের হাতেই বানিয়ে ফেলেছেন আস্ত একটা এয়ারক্র্যাফ্ট। রানওয়ে দিয়ে ছুটিয়ে নিয়ে গিয়ে আকাশে বেশ খানিক উড়েও এসেছেন।

এমন কাণ্ড দেখে প্রথম চোখ রাঙালেও পরে ফৈয়াজকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাই ভেবেছে পাকিস্তানি বিমানবাহিনী।

ফৈয়াজ বলেন, ‘বাবা মারা যায় যখন স্কুলে পড়ি। বড় হয়ে বিমানবাহিনীর পাইলট হবো ভেবেছিলাম, ফাইটার জেট ওড়াব, সেটা আর হয়নি।’

পাকিস্তানের পাঞ্জাবের প্রত্যন্ত টাবুর গ্রামে ছোট্ট তিন ঘরের বাড়ি তার। মা, স্ত্রী, ছেলেমেয়ে নিয়ে বড় সংসার। ফৈয়াজের কথায়, “ক্লাস এইটের পরই স্কুল ছেড়ে দিই। পয়সা রোজগারের জন্য ছোট থেকে নানা কাজ করেছি। এখন সকালে পপকর্ন বেঁচি, রাতে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করি।”

নিজের হাতে প্লেন বানানোর ধারণাটা আসে সেই ২০১২ সালেই, এমনটাই জানিয়েছেন ফৈয়াজ। ওই বছরই তিনি এমন একটা গাড়ি বানিয়েছিলেন যেটা পানিতেও দিব্যি চলে। তবে সেই গাড়ি নাকচ করে দিয়েছিল পুলিশ। এর পরেই এয়ারক্র্যাফ্ট বানানোর পরিকল্পনা।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে প্লেন দুর্ঘটনার কোনও সিরিজ দেখালেই সেটা মন দিয়ে দেখতে বসে যেতেন ফৈয়াজ। কীভাবে প্লেন উড়ছে, ল্যান্ড করছে খুঁটিয়ে সবটাই দেখতেন তিনি। তারপর অনলাইনে খোঁজাখুঁজি তো রয়েছেই। প্লেনের বড় বড় ব্লু-প্রিন্ট বার করে আনতেন দোকান থেকে, সেগুলো দেখেই নিজের প্লেনের নকশা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতেন।

“একদিন মাথায় নিখুঁত পরিকল্পনা চলে এলো। রোডকাটার দিয়ে বানালাম ইঞ্জিন, চটের ডানা আর রিকশার চাকা হলো প্লেনের চাকা। তৈরি হয়ে গেল মিনি এয়ারক্র্যাফ্ট,” যুবকের চোখে গর্ব।

তবে এই প্লেন বানানোর জন্য কাঠখড় কিছু পোহাতে হয়নি। ফৈয়াজ জানিয়েছেন, নিজের কিছুটা জমি বেঁচে আর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছ থেকে ৫০,০০০ টাকা ধার নিয়ে ছোটখাটো একটা ল্যাবরেটরি বানিয়ে ফেলেছিলেন। সেখানেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন তিনি। ফেব্রুয়ারিতে একবার ট্রায়াল দেয় তাঁর এই মিনি এয়ারক্র্যাফ্ট। পরে মার্চে লোকজন ডেকে প্লেন উড়িয়ে দেখান ফৈয়াজ। ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে দু’আড়াই কিলোমিটার উড়েও ছিল এই প্লেন।

তবে লাইসেন্স ছাড়াই যুবকের এমন প্লেন ওড়ানো দেখে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ৩০০০ টাকা বন্ডে ছাড়া পান তিনি। তবে ফৈয়াজের সৃজনশীল প্রতিভার প্রশংসা করতে ভোলেননি পুলিশ কর্তারা।

সম্প্রতি বিমানবাহিনীর নজরে পড়ে ফৈয়াজের এই প্লেন। পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ফৈয়াজকে সার্টিফিকেট দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। ফৈয়াজের স্ত্রী মুমতাজ বিবি বলেন, “আগে ভাবতাম, আমার স্বামী পাগলামি করছে। অভাবের সংসারে এমন খেয়ালকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু এখন আমাদের গর্ব হচ্ছে।

তবে ফৈয়াজের আক্ষেপ লাইসেন্স এখনও হাতে পাননি তিনি। অফিসার জাফার ইকবাল বলেছেন, অপেক্ষা কিছুদিন করতে। লাইসেন্স পেলেই ইচ্ছামতো আকাশে ডানা মেলতে পারবে ফৈয়াজের এয়ারক্র্যাফ্ট।

কেপি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ