বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


নজরুলের যে ইসলামি কবিতায় হৃদয় জুড়ায়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

উমারা হাবীব: আপন পরিচয়ের উৎস নিয়ে কোনো মানসিক অসুস্থতা মহৎ শিল্পীর জীবনে থাকে না। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও এর ব্যতিক্রম নন। নিজেকে উত্তম পরিচয়ে ‘খাদেমুল ইসলাম নজরুল ইসলাম’ লিখতেন ও বিশ্বাস করতেন।

ইসলামে বৈশ্বিক মানবতাবাদী কর্মধারাকে তিনি বিশেষ মান্য করতেন। তার সৃষ্টির উৎসেও এসবের সঠিক প্রভাব লক্ষণীয়। নজরুলের সাহিত্যে ইসলামি আদর্শের চরিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। সর্বজনীন মানবিক মূল্যবোধের যে আদর্শ ও বাস্তব দৃষ্টান্ত ইসলাম বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করেছে সে আদর্শ কোনো বিশেষ জাতি গোষ্ঠীর শুধু নয়। তা বিশ্বমানবের।

ইসলামি জীবন ব্যবস্থায় মনুষ্য জাতিকে এক আদমের সন্তান এবং পুরো মনুষ্য জাতিকে এক পরিবারের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। মানুষের উপর মানুষের প্রভুত্বকে বিনাশ করেছে। এক আল্লাহর প্রভুত্বের ছায়ায় বিশ্বমানবের জাগতিক ও আধ্যাত্মিক মুক্তি নিশ্চিত করেছে। সর্বময় ভ্রাতৃত্ব সাম্য সম্প্রীতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠা ইসলামি সমাজ ব্যবস্থার লক্ষ। সেই আদর্শের বাণীই কবির কলমে নিসৃত হয়েছে। কবি নজরুল লিখেন,
কেবল মুসলমানের লাগিয়া আসেনি ক ইসলাম
সত্য যে চায় আল্লায় মানে মুসলিম তারি নাম।

এক আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপনে ছিন্ন হয় দুনিয়ার সকল বিভেদ। আনে সমতা বিধান। কবির কলম এ চির সত্যকেই তুলে ধরে ,
জাতিতে জাতিতে মানুষে মানুষে
অন্ধকারের এ ভেদজ্ঞান
অভেদ আহাদ মন্ত্রে টুটিবে
সকলে হইবে এক সমান।

খাদেমুল ইসলাম নজরুল নিজের পথ মত বিশ্বাস একিভুত করেছে এক আল্লাহতে। নিজের বিশ্বাসে কবির কলম লিখে,

"যারা অশান্তি দুর্গত চাহে, তারা তাই পাবে, দেখো রে ভাই,
উহারা চলুক উহাদের পথে, আমাদের পথে আমরা যাই!
ওরা চাহে রাক্ষসের রাজ্য,মোরা আল্লার রাজ্য চাই,
দ্বন্দ্ব -বিহীন আনন্দ-লীলা এই পৃথিবীতে হবে সদাই।
( এক আল্লা জিন্দাবাদ)

এক আল্লাহ্‌ ‘জিন্দাবাদ’

উহারা প্রচার করুক, হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ ;
আমরা বলিব, ‘সাম্য, শান্তি, এক আল্লাহ্‌ জিন্দাবাদ।’
উহারা চাহুক সংকীর্ণতা, পায়রার খোপ, ডোবার ক্লেদ,
আমরা চাহিব উদার আকাশ, নিত্য আলোক, প্রেম অভেদ।
উহারা চাহুক দাসের জীবন, আমরা শহিদি দর্জা চাই ;
নিত্য মৃত্যু-ভীত ওরা, মোরা মৃত্যু কোথায় খুঁজে বেড়াই!

উমর ফারুক

তিমির রাত্রি –‘এশা’র আজান শুনি দূর মসজিদে
প্রিয়া-হারা কান্নার মতো এ-বুকে আসিয়া বিঁধে!
আমির-উল-মুমেনিন,
তোমার স্মৃতি যে আজানের ধ্বনি – জানে না মুয়াজ্জিন!
তকবির শুনি শয্যা ছাড়িয়া চকিতে উঠিয়া বসি,
বাতায়নে চাই – উঠিয়াছে কি রে গগনে মরুর শশী?

সুরা ফাতেহা

(শুরু করিলাম) ল'য়ে নাম আল্লার
করুণা ও দয়া যাঁর অশেষ অপার।
সকলি বিশ্বের স্বামী আল্লার মহিমা,
করুণা কৃপার যাঁর নাই নাই সীমা।
বিচার-দিনের বিভু! কেবল তোমারি
আরাধনা করি আর শক্তি ভিক্ষা করি।

অভ্যুদয়

মক্কা ছিল গো রাজধানী যেন‘জজিরাতুল আরবে।’
পাপের বাজারে করিত বেসাতি সমান পুরুষ নারী,
পাপের ভাঁটিতে চলিত গো যেন পিপীলিকা সারি সারি।

বালক বালিকা যুবা ও বৃদ্ধে ছিল নাকো ভেদাভেদ,
চলিত ভীষণ ব্যাভিচার-লীলা নির্লাজ নির্বেদ!
নারী ছিল সেথা ভোগ-উৎসবে জ্বালিতে কামনা-বাতি,

খালেদ

খালেদ! খালেদ! কীর্তি তোমার ভুলি নাই মোরা কিছু,
তুমি নাই তাই ইসলাম আজ হটিতেছে শুধু পিছু।
পুরানো দামামা পিটিয়া পিটিয়া ছিঁড়িয়ে গিয়াছে আজ,
আমামা অস্ত্র ছিল নাকো তবু দামামা ঢাকিত লাজ!

নয়া যমানা

বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা
শির উঁচু করি মুসলমান।
দাওয়াত এসেছে নয়া যমানার
ভাঙ্গা কেল্লায় ওড়ে নিশান।

রমজানের রোজা শেষে

ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ।
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন্‌ আসমানী তাগিদ।
তোর সোনা-দানা বালাখানা সব রাহেলিল্লাহ্‌।
দে জাকাত মুর্দ্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিদ।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ