বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


আল্লাহর সঙ্গে একান্তে আলাপন; ইতিকাফই মহান সুযোগ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তারেক সাঈদ
তরুণ আলেম লেখক

ইতিকাফ প্রভুর প্রেমে মগ্ন থাকার কার্যকরী একটি ইবাদত। আল্লাহর নৈকট্য লাভের অপার সুযোগ এনে দেয় এ ইতিকাফ। ইতিকাফ শব্দের অর্থ অবস্থান করা, স্থির থাকা, আবদ্ধ থাকা। শরিয়তের পরিভাষায় রমজানের শেষ দশদিন বা যেকোনো দিন দুনিয়ার সব কাজ-কর্ম তথা পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মসজিদে বা ঘরের পবিত্র স্থানে ইতিকাফের নিয়তে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলা হয়।

ইতিকাফের বহু উদ্দেশ্য রয়েছে- দুনিয়াদারির ঝামেলামুক্ত হয়ে একান্ত নিরালায় মহাপ্রভুর ধ্যানে প্রেম নিবেদন করা, রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করা, ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে রমজানের পুণ্যময় সময়ে গুনাহ মাফ এবং নেকির পাল্লা ভারি করা।

হাদিস শরিফে আছে রাসূল পাক সা. রমজানের শেষ দশকে নিয়মিত ইতিকাফ করতেন এবং তার ইন্তেকালের পর উনার স্ত্রীগণ ইতিকাফ করতেন। বুখারি

এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব ‎দিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার গৃহকে ‎তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকুকারী-‎সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর।’ -সূরা আল বাকারা-১২৫

ইতিকাফ তিন ধরনের ওয়াজিব, সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ ও মুস্তাহাব। কেউ ইতিকাফ মানত করলে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ কেফায়া। জুমার মসজিদের আওতাধীন যে মহল্লা রয়েছে সেখান থেকে কমপক্ষে এক ব্যক্তি হলেও তা আদায় করবেন, নচেত্ পুরা মহল্লাবাসীই গোনাহগার হবেন।

রমজানের শেষ দশদিন ছাড়া আর যে ইতিকাফ রয়েছে তা পালন করা মুস্তাহাব। পুরুষরা মসজিদে আর নারীরা ঘরের নির্দিষ্ট কোনো একটি স্থানে অবস্থান করে ইতিকাফ পালন করবেন। ২০ রমজান সূর্যাস্তের পূর্বে ইতিকাফ আরম্ভ করতে হবে এবং ঈদের চাঁদ দেখার পর মসজিদ বা ইতিকাফের স্থান থেকে বের হতে হবে।

গুরুত্ব: আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হবে না। ’ সূরা বাকারা-১৮৭।

ইতিকাফের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করবে, সে ব্যক্তি দুটি পবিত্র হজ ও দুটি পবিত্র উমরার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে।

রাসূল সা. আরও বলেছেন, ইতিকাফকারী গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে এবং আমল না করেও তারা আমলকারীদের নেকির পরিমাণ নেকির মালিক হয়।–তিরমিজি

হজরত আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সা. দুনিয়াতে যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন রমজানের শেষ ১০ দিন মসজিদে ইতিকাফ করেছেন। জীবিত থাকাকালীন কোনো রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ বাদ দেননি। -বুখারি, মুসলিম।

ইতিকাফের বিরাট সওয়াব ও মর্যাদা লাভ করার জন্য সবারই সচেষ্ট হওয়া দরকার। বিশেষ করে তা মসজিদে, রমজানে এবং রমজানের শেষ দশকে হলে এর মর্যাদা বহু বহু গুণ বেশি।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ