বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতার, যা বলছে নুসরাতের পরিবার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতারের খবরে নুসরাতের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্যারিস্টার সুমনসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার মেয়ে হত্যার বিচারের দায়িত্ব নিয়েছেন। উনার কারণে নুসরাত হত্যা মামলার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। ব্যারিস্টার সুমনের করা মামলায় ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতার হয়েছেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ সমগ্র দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

নুসরাতের মা বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম আমার মেয়ের হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।

নুসরাতের বড় ভাই ও নুসরাত হত্যা মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম তার অফিসে নুসরাতকে নিয়ে নাজেহাল করেছেন, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে পুলিশের গ্রহণযোগ্যতা আরও বেড়ে গেছে।

ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিচার শুরুর মধ্য দিয়ে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করার দাবি করেছে নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল রায়হান।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তার অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানি করে। রাফি এর প্রতিবাদ করেন এবং এ বিষয়ে রাফির মা শিরীন আক্তার মামলা করলে পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান।

ওই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল নুসরাত ও তার পরিবারকে। কিন্তু মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন। আগুনে শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রাফি ১০ এপ্রিল রাতে হাসপাতালে মারা যান।

৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। রাফির মৃত্যুর পর তা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।

হত্যাকাণ্ডের আগে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান নুসরাত। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন তখন নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ৮ মে মোয়াজ্জেমকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তিনি রংপুর রেঞ্জ অফিসে যোগ দেন।

গত ক’দিন থেকে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে ফেনী ও রংপুর পুলিশের ঠেলাঠেলি চলছিল। ঈদের আগে সেখান থেকে নিরুদ্দেশ হন ওসি মোয়াজ্জেম। পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দুদিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাটি জারি করেন। আগামী ১৭ জুন পরোয়ানা তামিল-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ