মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ।। ৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ৯ রমজান ১৪৪৫

শিরোনাম :

যেভাবে গ্রেফতার হলেন ওসি মোয়াজ্জেম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: নুসরাত হত্যামামলায় সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার নিয়ে বহু লুকোচুরি হয়েছে।

সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল; গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর তিনি পালিয়েছেন। তবে তিনি শিগগিরই গ্রেফতার হবেন বলে পুলিশ ও সরকারের ঊর্ধ্বতনরা বলছিলেন। অবশেষে আজ রোববার (১৬ জুন) তাকে গ্রেফতার করা হলো।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ওসি মোয়াজ্জেম শনিবার (১৫ জুন) রাতে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলেন। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় জামিনের জন্য হাইকোর্টে যান।

পরে জামিন শুনানির তারিখ পিছিয়ে সোমবার দিন ধার্য করেন আদালত। এসময়ের মধ্যে কে বা কারা গোপনে পুলিশকে জানায়; ওসি মোয়াজ্জেম আদালত এলাকায় অবস্থান করছেন। এরপরই তিনি আদালত থেকে বেরিয়ে যান। পরে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে অভিযান চালিয়ে বিকাল চারটায় তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

রমনা জোনের ডিসি মারুফ সর্দার বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনকে হাইকোর্টের কদম ফোয়ারার কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি সোনাগাজী থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। ওই থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। তাই তাদের কাছে মোয়াজ্জেমকে হস্তান্তর করা হবে। তাকে কোন আদালতে তোলা হবে এটি তারাই ঠিক করবে।

১৫ এপ্রিল ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ব্যারিস্টার সুমনের মামলাটি প্রথমে অভিযোগ আকারে ছিল। পরে পিটিশন মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত।

ওসির বিরুদ্ধে থানায় সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির বক্তব্য ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়াসহ প্রত্যেকটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্তে প্রমাণিত সব তথ্য-উপাত্তসহ প্রতিবেদন আদালতকে দেওয়া হয়।

২৭ মে ওসির বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ৩১ মে পরোয়ানার চিঠি ফেনীর পুলিশ সুপার কাজী মনির-উজ-জামানের কার্যালয়ে যায়। তবে পুলিশ সুপার বিষয়টি অস্বীকার করতে থাকেন। তিনি ৩ জুন পরোয়ানা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন।

এর দুই দিন পর রংপুর রেঞ্জে পরোয়ানা পাঠানো হয়। তখন কাজটি বিধি মোতাবেক হয়নি বলে জানায় রংপুর রেঞ্জ। পুলিশের এমন গড়িমসির মধ্যে আত্মগোপনে যান মোয়াজ্জেম। পরে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে যান ওই ছাত্রী। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে চার-পাঁচজন বোরকা পরিহিত ব্যক্তি ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।

পরে উদ্ধার করে স্বজনরা সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফি মারা যান।

এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া ও মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ