শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


সংস্কারমুখী আলেম হতে চান দাওরায়ে হাদীসে ২য় স্থান অর্জনকারী নাহিয়ান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ: আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে গতকাল ৩ জুলাই বুধবার। এতে সারাদেশে মেধাস্থান দ্বিতীয় হয়েছেন সিলেট জামিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর এর মেধাবী ছাত্র হাসান আল মাহমুদ নাহিয়ান। নাহিয়ানের গর্বিত বাবার নাম হাফেজ আবুল কালাম। মায়ের নাম রাহেনা বেগম।

১৯৯৯ সালের ১৬ মার্চ জন্ম নেয়া নাহিয়ানের বাড়ি সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানার ব্রাহ্মণগ্রাম ইউনিয়নের অন্তর্গত ইনামতি গ্রামে। নাহিয়ান সব ভাই বোনের মাঝে ৩য়। লেখাপড়ার শুরুটা করেছিলো গ্রামেই। তারপর কওমি মাদরাসার মুতাওয়াসসিতা ২য় বর্ষ (মিযান) থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত সিলেটের জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুরে পড়েন।

মেশকাত ও শরহে বেকায়ায় আঞ্চলিক বোর্ড ‘আজাদ দ্বীনী এদারা'য় প্রথম হয়েছিলেন। বর্তমানে সিলেট শহরের দারুল হুদা নামের একটি মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি জামেয়াতুশ শরইয়্যা সিলেট এ ইফতা বিভাগেও অধ্যায়ণ করছেন তিনি।

১৪৪০ হিজরির আল হাইআতুল উলইয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সারাদেশে ২য় স্থান অর্জনকারী হাসান আল মাহমুদ নাহিয়ানের মোট নম্বর ৯৩০। প্রথম স্থান অর্জনকারী থেকে মাত্র ১ নাম্বারের ব্যবধান।

জামিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুরের মুহাদ্দিস মুফতি ফরহাদ আহমদের মাধ্যমে কথা হয়েছিলো এ মেধাবী মুখ হাসান আল মাহমুদ নাহিয়ানের সাথে।

পড়াশুনায় কোন বিষয়ের দিকে আপনার আগ্রহ বেশি। জানতে চাইলে বললেন, ইলমে হাদিসের প্রতি আমার আগ্রহ বেশি। কারণ হিসেবে বললেন, বর্তমানে আমাদের দেশে যত মুফতিয়ানে কেরাম রয়েছেন। সে পরিমাণে হাদিস বিশারদ নেই। তাই আমি নিজেকে একজন হাদিসের খাদেম হিসেবে নিয়োজিত করতে চাই।

তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, আপনার পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো রুটিন ছিলো কিনা? উত্তরে বললেন, আমি সব সময় রাত ১১:৩০ মিনিট পর্যন্ত পড়তাম। আর সকালবেলা সকাল ৮ পর্যন্ত পড়ার টেবিলে বসা থাকতাম। এটি ছিলো আমার নিয়মিত পড়ার রুটিন।

সারাদেশে ২ নম্বর হওয়ার পর আপনার অনুভূতি কি? এমন প্রশ্ন করলে বললেন, আমি সর্বপ্রথম আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বাবা-মা ও উস্তাদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সহপাঠীদের প্রতিও ভালবাসা জানাচ্ছি।

মাদরাসায় থাকাবস্থায় ছাত্রভাইদের থেকে কেমন রেসপন্স পেতেন? বললেন, আমি সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি আমার সহপাঠীদের থেকে। কারণ আমি মনে করি আমার এ অর্জনের পেছনে তারাই আমাকে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছে।

আর সেটা হলো, কেউ কোনো বিষয় না বুঝলে উস্তাদ না থাকলে আমার থেকে বুঝে নিতো। এতে করে সে বিষয়টি আমারও হল হয়ে যেতো। আর সব সময় তাকরার করার দ্বারা আমার অনেক বেশি ফায়দা হয়েছে।

পাঠ্যবই ছাড়া কোন বই বেশি পড়েন আপনি? বললেন, জীবনধর্মী বই বেশি পড়ি। এর মাঝে মাওলানা আবু তাহের মেসবাহর এর বইগুলো রয়েছে। ইতিমধ্যে তার রচিত দরদী মালীর কথা শোনো, বায়তুল্লাহর মুসাফির, বায়তুল্লাহর ছায়ায়সহ আরো একাধিক বই পড়েছি।

হাইয়ার পরীক্ষার সফলতার পেছনে মূল মেহনতের ধারা কী ছিলো? এমন প্রশ্নের জবাবে জানালেন,
প্রথম থেকেই কিতাব মোতালায়ায় মনোযোগ দিয়েছিলাম। ক্লাসের সবগুলো পড়া ক্লাসে বুঝে মুখাস্থ করার চেষ্টা করতাম।

সর্বশেষ প্রশ্ন করেছিলাম, জীবনে আপনি কি হতে চান? জবাবে বললেন, আমি সংস্কার মুখী আলেম ও বিশ্বখ্যাত দায়ী হতে চাই।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ