শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


পাঁচ বছরের জন্য টঙ্গির সাতাইশসহ দু’টি মাদরাসার পরীক্ষা বাতিল করল হাইয়াতুল উলইয়া

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মদ : ভ্রান্ত আকিদা ও দেওবন্দি চিন্তাধারার বিরোধীদের দাওরায়ে হাদীসের (তাকলিম) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দু’টি মাদরাসা আল হাইয়াতুল উলইয়ার অধীনে আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত কোন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ এ অথরিটি।

১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ঢাকার মতিঝিলে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত সংস্থাটির সদস্য মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া ও মাওলানা মুসলেহুদ্দিন রাজু আওয়ার ইসলামকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শাস্তি প্রাপ্ত মাদরাসা দুটি হলো- আল জামিয়াতুল উসমানিয়া দারুল উলুম, সাতাইশ, টঙ্গি মাদরাসা ও মজিদবাগ মাদরাসা।

বৈঠকে উপস্থিতে মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া জানান, ভ্রান্ত ও দেওবন্দি চিন্তাধারার বিরোধী আকিদা পোষণকারী ‘অছাত্রদের’ দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ায় সাতাইশ ও মজিদবাগ মাদরাসার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে আগামী পাঁচ বছর পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইয়াতুল উলইয়া। পাশাপাশি এ দু’টি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার মারকাজ থাকলে, তা বাতিল করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ওই বৈঠকে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দাওরায়ে হাদীসের ফল প্রকাশের পর জানা যায়,  কওমি মাদরাসা ও দেওবন্দি চিন্তাধারার বিপরীতমুখী একটি সংগঠনের সভাপতি গাজীপুরের সাতাইশ মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

সামাজিক মাধ্যমে এ খবর ভাইরাল হওয়ার পর নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে পড়ে কওমি মাদরাসাভিত্তিক শিক্ষা সংস্থা আল আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে হাইয়াতুল উলইয়া ওই মাদরাসার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় ঘোষণা দেয়। সবশেষ আজকের বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য হাইয়ার অধীনে তাদের পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে, কওমি মাদরাসার নেসাবে তালিমকে (পাঠ্যক্রম) মানসম্মত করার লক্ষ্যে দেশের সকল কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সঙ্গে হাইয়াতুল উলইয়া আলোচনায় বসবে বলেও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সদস্য মাওলানা মুসলেহুদ্দিন রাজু।

তিনি জানান, বৈঠকে কওমি শিক্ষাব্যবস্থাকে অভিন্ন সিলেবাসে ১৬ বছরব্যাপী শিক্ষাব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে একটি প্রস্তাব করা হয়। অর্থাৎ, আমাদের কওমি শিক্ষাধারায় দরসে নেজামী, সর্ট কোর্স, মাদানী নেসাব, স্বঘোষিত নেসাবসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। হাইয়াতুল উলইয়া কর্তৃপক্ষ এ সকল নেসাবকে অভিন্ন ও একক নেসাব প্রণয়ন করার লক্ষ্যে দেশের সকল কওমি মাদরাসাভিত্তিক শিক্ষাবোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।

সংস্থাটির কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ৩০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

আরএম/

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ