শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


শীতার্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে আল্লামা কাসেমীর আহ্বান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, তীব্র শীতে নিদারুণ কষ্ট ও দুঃসহ অবস্থায় পড়ে মানবেতন জীবন যাপন করছে দেশের লাখ লাখ হতদরিদ্র, নিঃস্ব, ছিন্নমূল মানুষ। আর্থিক দুরবস্থার কারণে অনেকেই শীতের গরম কাপড় কিনতে পারছে না। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় দুঃস্থ ও গরীব মানুষ চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাই মানবিক কারণে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো ধনী ও সমর্থবান সকলের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব।

রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জমিয়ত মহাসচিব আরও বলেন, শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন সুচিকিৎসা, ওষুধ এবং শীত মোকাবিলায় সরকারি বা বেসরকারিভাবে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা গণহারে গুরুতর শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে শীতের দুর্ভোগে মৃত্যুর হারও বাড়বে। এ জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ, দলমত-নির্বিশেষে বিত্তবানদের শীতার্ত বস্ত্রহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো কর্তব্য।

আল্লামা কাসেমী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের সারাদেশে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, মানবসেবা, মানবাধিকার ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের দলীয় নেতাকর্মীদেরকে সব সময় সোচ্চার থাকতে হবে।

এর পাশাপাশি মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ তরুণ ও যুবসমাজের প্রতি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা নিয়ে শীতার্ত গরীব-দুস্থদের জন্য শীতবস্ত্র ও ত্রাণ বিতরণে উদ্যোগ নেয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।

আল্লামা কাসেমী বলেন, প্রতিবছরই জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ শীতে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট যেখানে লাঘব হয়নি সেখানে তীব্র শীত কষ্টে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে শীতজনিত নানা রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়ে সিমাহীন কষ্ট ভুগছে। শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার গ্রামীণ ভূমিহীন কৃষক, ক্ষেত মজুর এবং নিম্নআয়ের মানুষ।

তিনি বলেন, ইসলাম মানবতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের ধর্ম এবং শান্তির ধর্ম। গরীব ও অসহায় মানুষকে সার্বিক সহযোগিতা করতে ইসলাম যথেষ্ট উৎসাহিত করে। এতে পরকালে বিশাল সাওয়াব ও পুরষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা.।

হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়াতে মানুষকে খাদ্য দান করেছে, রোজ কিয়ামতের দিন তাকে খাদ্য দান করা হবে। যে আল্লাহকে খুশি করার জন্য মানুষকে পানি পান করিয়েছে, তাকে সেদিন পানি পান করিয়ে তার পীপাসা দূর করা হবে। যে মানুষকে বস্ত্র দান করেছে, তাকে সেদিন বস্ত্র পরিধান করিয়ে তার লজ্জা নিবারণ করা হবে।

আল্লামা কাসেমী বলেন, প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মানুষেরই পারস্পরিক মানবতাবোধ ও উদারনৈতিক মনমানসিকতা থাকা অপরিহার্য। একজন মানুষ বিপদে পড়লে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অসহায় হলে তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করা সমাজের বিত্তবান প্রতিবেশীদের ঈমানি দায়িত্ব ও মানবিক কর্তব্য। সব মানুষের উচিত সমগ্র সৃষ্টির প্রতি দয়ামায়া, অকৃত্রিম ভালোবাসা, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও সহানুভূতি বজায় রাখা।

তাই দেশের সর্বস্তরের ধনাঢ্য, বিত্তবান, শিল্পপতি ব্যবসায়ীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, এ শীতের মৌসুমে গরিব, অসহায়, দুঃখী মানুষকে সামর্থ্য অনুযায়ী শীতবস্ত্র দিয়ে সাহায্য করুন।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ