শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


মরু পেসেঞ্জারের পাঠ উন্মোচণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম আয়োজিত কবি-লেখকদের পিঠাপুলি উৎসব ও ভিপি বশিরকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উন্মোচিত হয়েছে মরু পেসেঞ্জার।

গত মঙ্গলবারের (১৪ জানুয়ারি) এ অনুষ্ঠানে লেখকদের সম্মানে পিঠাপুলি উৎসব ছিলো দেখার মত। অনুষ্ঠানে নন্দিত লেখক মাসউদুল কাদিরের নতুন বই ‘মরু পেসেঞ্জার’ এর পাঠ উন্মোচন করা হয়।

বই পাঠ করেন, হালাল মিডিয়ার পরিচালক কবি সুলাইমান সাদী। বইয়ের উপর আলোচনা করেন, কবি ও নজরুল গবেষক মহিউদ্দিন আকবর।

তিনি বলেন, মাসউদুল কাদির আমার অত্যন্ত প্রিয়ভাজন, যিনি মরু প্যাসেঞ্জার লিখেছেন। কে যেনো বলেছিল মরুর ড্রাইভার হয়ে মরু মরু প্যাসেঞ্জার লিখেছেন তিনি। গাড়ি যাচ্ছে মরুভূমির দিকে। ড্রাইভারের ভূমিকা পালন করেছেন মরু প্যাসেঞ্জার। একত্রিশটি গল্প নিয়ে বইটি মলাটবদ্ধ করেছেন মাসউদুল কাদির।

টাইটেল গল্পটি আমি কথা বলতে চাই। টাইটেল গল্পটি হলো মরু প্যাসেঞ্জার। এ গল্পটি একজন আলেম কাবার মুসাফিরের গল্প এঁকেছেন তিনি। সুলাইমান কাতানী নামে একজন আলেমের কাবার সফরের ছায়া অবলম্বনে গল্পটি তৈরী করেছেন মাসউদুল কাদির। গল্পটি অসাধারণ সুন্দর হয়েছে। যেখানে ছিল ডাকাতের আস্তানা, যা কুসংস্কার প্রচলিত ছিল, মূলত কুসংস্কার তৈরী করেছে ডাকাতেরা। তারা বাড়ি বাড়ি লুণ্ঠন করে, মানুষ হত্যা করে ওই বাড়িতে এনে ফেলে রাখে।

স্বাভাবিকভাবেই মানুষের ধারণা হয় ওই বাড়িটি ভূত প্যাতের আস্তানা। মানুষ ভয়ে যায় না ওই বাড়িতে। কিন্তু একজন মরুর প্যাসেঞ্জার যার অভিষ্ঠ লক্ষ্য ছিল তিনি কাবা শরিফ যাবেন। মক্কা যাবেন। সেখানে গিয়ে হজ পালন করবেন। আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করবেন। এই ব্যক্তিটি এই গ্রামে এসেছেন অতিথি হিসেবে ওই আস্তানায় ঢুকে গেছেন। সেখানেই ঘটলো ঘটনা। সেখানে ডাকাত দলের সদরদাররা মাওলানা সুলেমান কাতানীর আচার আচরণে, বাক্যবানে অস্থির হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেরা আত্মসমর্পণ করে এবং দীনের পথে ফিরে আসে। মরু প্যাসেঞ্জার গল্পের এই আসল ব্যক্তিটি হলেন একজন আলেম, একজন মৌলভী।

মাসউদুল কাদিরের এই একটি গল্প পাঠ করে সহজেই বুঝতে পেরেছি বাকি গল্পগুলো কী হতে পারে। আকলমন্দ কে লিয়ে ইশারা কাফি আস্ত।

একটা সময় আমরা মনে করতাম, হুজুরদের লেখাতো হবে মাসআলা মাসাইল- ফতোয়া। এখন পর্যন্ত আমাদের সমাজের ধারণা এটাই, আলেমগণ মাসআলা মাসাঈল, হাদিস, তাফসির ইত্যাদি বিষয়ে লিখে থাকেন। মূল সাহিত্যে, মৌলিক সৃজনশীল লেখায় তাদের উপস্থিতি কম। এই ধারণা ভেঙে দেয়ার জন্য এখন অনেক কলম সৈনিক তৈরী হয়েছেন। এই কলম সেনাদের মধ্যেই একজন মাসউদুল কাদির।

যাকে যখন হাঁটি হাঁটি পা পা তখন ওই সময় আমি তাকে কাছে পেয়েছিলাম। বুকের সাথে জড়িয়ে ধরেছিলাম। মাসউদুল কাদিরের হাত থেকে বেশ কিছু বইয়ের মধ্য থেকে এই বইটি একটি। মরু প্যাসেঞ্জারের মতো নিরেট একটি সাহিত্যের বই কিন্তু সাহিত্যের বই হলেও এর সঙ্গে শিকড়ের যে সম্পর্ক তা অসাধারণ। বইটির সঙ্গে আদর্শের সম্পর্ক-এটাই সবচেয়ে বড় বিষয় আমাদের।

মরু প্যাসেঞ্জারের মতো কাজ উপহার দিয়ে বাংলা ভাষা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে হবে। বাংলা ভাষা সাহিত্যকে একসময় খুবই অবহেলা করা হয়েছে মাদরাসাগুলোতে। এটা আপনারাই সবচেয়ে বেশি জানেন। গল্পের বই কাছে পেলে অনেক মাদরাসায় পিটুনি পর্যন্ত খেতে হয়েছে। কেন তার কাছে কবিতার বই পাওয়া গেলো? সেদিক থেকে মাসউদুল কাদিরের মরু প্যাসেঞ্জার ঝকঝকে ছাপা, অসাধারণ বাঁধাই করা বইটি বাজারে এসেছে।

আমরা এই গ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করছি। আমি মনি করি, এই বইটি মাসউদুল কাদিরের জীবনে আরও নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসুক। এরচেয়ে আরও ভালো বই তিনি উপহার দেবেন। এটাই আজকে আমাদের প্রত্যাশা।

মরু প্যাসেঞ্জারের লেখক আলেম সাংবাদিক মাসউদুল কাদির বলেন, সমাজের সত্য কিছু দৃশ্যপট নিয়ে গল্প লেখার চেষ্টা করেছি। কেমন হয়েছে, পাঠকের রঙিন চশমায় কেমন লাগবে সেটা আমি বলতে পারবো না। এখন পাঠকই সবচেয়ে বড় বিচারক। মরু প্যাসেঞ্জারের প্রতি আমার ভাই-বন্ধু-পাঠককুলের আগ্রহ দেখে আমি অভিভূত। আরও নতুন নতুন কাজে যুক্ত হতে উৎসাহিত করবে।

কবি মহিউদ্দিন আকবরের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে মাসউদুল কাদির বলেন, সৃজনশীল গল্পবই নিয়ে কবি অনেক বেশি প্রশংসা করে ফেলেছেন। তার এই ভালোবাসার প্রতিদান যেনো সামনের লেখাগুলোতে উপস্থাপন করতে পারি- আল্লাহ তাওফিক দিন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ