বেলায়েত হুসাইন।।
স্কুল থেকে ফেরার পথে আট বছরের ফিলিস্তিনি কন্যা শিশু মালিক ইসাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে একজন ইসরায়েলি পুলিশ-এতে শিশুটি বাম চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছে। গত সপ্তাহের শেষে ফিলিস্তিনি রাজধানী অধিকৃত জেরুসালেমের আল-ইসাওয়াইয়া শহরে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই আক্রান্ত শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় এবং চিকিৎসক তার চক্ষু উপড়ে ফেলার নির্দেশ দেন।
ফিলিস্তিনের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল কুদস জানায়, ঘটনার পর থেকে এই পর্যন্ত ইসরায়েলি পুলিশের তরফ থেকে কোন বিবৃতি পাওয়া যায়নি। বিনা কারণে স্কুল থেকে ফেরার পথে শিশুটির ওপর কেন রাবার বুলেট ছোড়া হল- এবিষয়ে কারও নিকটই পরিস্কার ধারণা নেই।
বেসরকারি একটি ইনফরমেশন সেন্টারকে মালিক ইসার পিতা বলেন, এই ঘটনায় আমরা ভেঙে পড়েছি। ডাক্তার মালিকের বাম চোখ উপড়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন। আর এটা ছাড়া আমাদের সামনে ভিন্ন কোন উপায় নেই। চোখটি ফুলে গেছে, এর ভিতরে মারাত্মক জখমের সৃষ্টি হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন, চক্ষু উপড়ে ফেলা না হলে আরও ভয়ঙ্কর কিছু ঘটার আশঙ্কা রয়েছে- যে সমস্যা মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আনাদুলু আরবির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, শিশুটির ডান চোখও আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে। মস্তিষ্কে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সেটাও উপড়ানো লাগতে পারে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তবে মালিক ইসার পিতা চিকিৎসককে অনুরোধ করেছেন যেভাবেই হোক অন্তত তার একটি চোখ ভাল করার চেষ্টা করার, যাতে সে পৃথিবীর আলো থেকে বঞ্চিত না হয়।
কিন্তু তার এই অনুরোধ চিকিৎসক রাখতে পারবেননা বলে তিনি আশঙ্কাবোধ করছেন। দৃষ্টি হারানোর ভয়ে শিশু মালিক ইসা শুক্রবার সারারাত না ঘুমিয়ে কেঁদেছেন বলেও তার পিতা জানান।
হামলার সময় মালিকের সঙ্গে তার অন্যান্য বোনেরাও ছিল। অল্পের জন্য তারা রক্ষা পেয়েছে ঠিকই, তবে তাদের সকলেই মারাত্মক মানসিক আক্রান্তের শিকার হয়েছে। তাদেরও চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। আসলে এই হামলা আমাদের পুরো পরিবারকে মানসিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। বলছিলেন ইসা মালিকের পিতা।
প্রসঙ্গত, বিগত দুই বছর যাবত ইসরায়েলি পুলিশ কতৃক ধারাবাহিক হামলার নানা অভিযোগ করে আসছেন আল-ইসাওয়াইয়া শহরের বাসিন্দারা। তাদের দাবি, ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দেয়া, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস ও পুরুষদের বিনা অপরাধে গ্রেফতারসহ ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর অমানবিক অত্যাচার করে চলছে প্রতিনিয়ত। এবং দখলদারদের হামলার শিকার হয়ে অনেক ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন বলেও জানান তারা।
আল-ইসাওয়াইয়ার জনসংখ্যা আনুমানিক ত্রিশ হাজারের অধিক। শহরটি অধিকৃত জেরুসালেমের অন্যতম উত্তেজনাপূর্ণ শহর হিসাবে বিবেচিত হয়।
আনাদুলো ও আল কুদস থেকে বেলায়েত হুসাইনের অনুবাদ
-এটি