মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫


কাম না করলে খামু কী? ঘরে একবেলা খাবারের চাউল নাই।

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রফিকুল ইসলাম জসিম: করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জ উপজেলার জনজীবন।
আদমপুর বাজারে ঘোরামারা পয়েন্টে সমানে অপেক্ষা করছিলেন এক অটোরিক্সা চালক। করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিতে কেমন চলছে জীবন যাত্রা? জিজ্ঞেস করতেই মণিপুরি মুসলিম সম্প্রদায়ের হাফিজ উদ্দিন অটো রিকসাচালক বলেন ওইসব কথা।

করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। সারাদেশে সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের জনসমাগম নিষেধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠা ও কোচিং বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সচেতনতার জন্য মাস্ক ও জীবানুমুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে। জরুরী কোন কাজ ছাড়া আগামী ১৪দিন রাস্তাঘাটে মানুষকে না বেরোনোর জন্য বিশেষ ভাবে সর্তক করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে প্রচার করা হচ্ছে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য।

গত কয়েকদিন থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার রাস্তাঘাটে যানবাহন, অটোরিক্সা, রিক্সা, ভ্যান ও মোটাসাইকেল চলাচল অনেকটা কমে গেছে। শহরে রাস্তাঘাটে অটোরিক্সা ও ভ্যান তেমন চোখে পড়ছেনা। আতঙ্কে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা বিপাকে পড়েছেন। আয় রোজগারের কোন পথ না থাকায় পেটের দায়ে তারা ঘরে থাকতেও পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন।

এদিকে মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সরিষকান্দি শব্দকর পাড়ার ২৫-৩০টি পরিবার করোনা প্রভাবে ভাল নেই। করোনা ভাইরাসে করনীয় বিষয়ে কিছুই জানেনা না তারা। ঘন বসতি নোংরা পরিবেশে রোগ জীবাণু নিয়ে বসবাস করছে শব্দকর সমাজ। ভ্যান-ঠেলা- রিকশা চালিয়ে ও ভিক্ষাবৃত্তি করে চলা জীবন করোনা প্রভাবে স্তমিত হয়ে গেছে। অনাহারে দিন কাটছে তাদের। ছোট ছোট বাচ্চারা বলছে বাবা রিকশায় যায়নাই তাই লাল চা আর চাল ভাজা খেয়ে দিন পার করছি।

করোনা আতঙ্কে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাই আতঙ্কিত না হয়ে দুই সপ্তাহ ঘরে সময় কাটানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সচেতন করা হচ্ছে।করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জ উপজেলা জনজীবন।

নিত্যদিন সকালবেলা গরীব কৃষকেরা শাক-তরকারী বেচতে বাজারের দিকে যেতেন। ওতে তাঁদের যা কিছু পকেটস্থ হতো তা দিয়ে পরিবার-পরিজনের প্রয়োজন মেটাতেন। হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনিতে রিকসা চালিয়ে দু’পয়সা রোজগার করতেন রিকসাওয়ালারা। এভাবে মাছবিক্রেতা, সবজিবিক্রেতা—এঁদের প্রত্যেকেই হররোজ রোজগারের উপরে নির্ভরশীল। হুকুমতের বাসিন্দারা কি কালেভদ্রেও সে-সব প্রান্তিক মানুষের খবর রেখেছেন?

কমলগঞ্জে স্মরণাতীত কাল হতে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি ক্ষুদ্র জনজাতির নিজস্ব সমাজ সংস্কৃতি, রীতিনীতি, ধর্ম ভাষা ও নৃতাত্ত্বিক পরিচিতি নিয়ে মণিপুরি, খাসিয়া, গারো, সাঁওতাল, ত্রিপুরা, শব্দকর, চা শ্রমিকসহ জনসমাজ বিদ্যমান। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে দুঃস্থ কাছে প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দিয়ে প্রশংসিত এলাকায় বিভিন্ন নেতাকর্মীরা। তবে এ উপজেলায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মানুষের সহযোগীতায় সরকারী -বেসরকারি -সামাজিক সংগঠন এগিয়ে আসার আহবান সচেতনমহলের।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ