শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেয়ে কবর দেয়া ভালো: ডব্লিউএইচও

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর লাশের শরীর মহামারি রোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গণহারে মানুষ মারা গেলে লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেয়ে কবর দেয়া উত্তম বলেও মত দিয়েছে সংস্থাটি।

নিজস্ব ওয়েবসাইটে ‘রিস্কস পোজড বাই ডেড বডিস আফটার ডিজঅ্যাস্টারস’ শিরোনামে একটি নির্দেশনা প্রকাশ করে ডব্লিউএইচও।

এতে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে করোনা ভাইরাসে মৃত ব্যক্তি থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। কারণ মহামারিতে মারা যাওয়ার পর মানুষের শরীরে ওই এজেন্টের বেশিরভাগই দীর্ঘ সময় জীবিত থাকে না। তবে লাশের সঙ্গে সংস্পর্শ অব্যাহত রাখলে (কন্সট্যান্টলি ইন কনকাক্ট উইথ করপসেস) যক্ষ্মা বা রক্তবাহিত ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে।

লাশ থেকে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত কিছু ঝুঁকি থাকে। যেমন কেউ যদি কলেরা বা রক্তপ্রদাহজনিত জ্বরে (হেমোরেজিক ফিভার) মারা যান, তাহলে এটা ঘটতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও বলেছে, যেসব মানুষ নিয়মিত মৃতদেহ দাফন বা এর দাফন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাদের যক্ষ্মা, রক্তবাহিত ভাইরাস (যেমন হেপাটাইটিস-বি, সি এবং এইচআইভি) এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল (যেমন কলেরা, ই-কোলি, হেপাটাইটিস-এ, রোটাভাইরাস ডায়রিয়া, সালমানেলোসিস, শিগেলোসিস এবং টাইফয়েড/প্যারাটাইফয়েড জ্বরে) সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।

সংস্থাটি জানায়, এসব তথ্য ও ঝুঁকির কথা একই সঙ্গে জরুরি বিভাগের কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া উচিত, যাতে যথাযথ পূর্বসতর্কতা অবলম্বন করা যায়, যখন মৃতদেহ নাড়াচাড়া করা হয়। একই সঙ্গে আতঙ্ক ও ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো যায়।

এ ক্ষেত্রে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাতে বলা হয়েছে, যখন গণহারে মানুষ মারা যায় এবং মৃতদের আর শনাক্ত করা সম্ভব হয় না তখন লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেয়ে কবর দেয়া উত্তম। জনস্বার্থের জন্য গণকবর কোনো সুপারিশকৃত বিষয় নয়। এতে প্রচলিত সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ আদর্শগুলো লঙ্ঘিত হতে পারে। লাশের কাফন-দাফনে পারিবারিক প্রয়োজন ও সামাজিক রীতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা লাশের কাফন-দাফনের সঙ্গে যুক্তদের প্রতিও কিছু পরামর্শ দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কবরস্থান হতে হবে পানির উৎস, যেখান থেকে পান করার পানি ব্যবহার করা হয়, তা থেকে কমপক্ষে ৩০ মিটার দূরত্বে। পানির স্তর থেকে কমপক্ষে দেড় মিটার উঁচুতে হতে হবে কবরস্থান এবং তা হতে হবে ০.৭ মিটার আনস্যাচুরেটেড জোনে।

কবরস্তান বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পৃষ্ঠের পানি যাতে কোনোভাবে আবাসিক এলাকায় প্রবেশ না করে। যখন মৃতের শরীরের রক্ত ও তরল পদার্থ ব্যবস্থাপনা করা হয় তখন সার্বজনীন পূর্ব সতর্কতামুলক ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। শুধু একবার একটি গ্লোভস ব্যবহার করতে হবে এবং তা ডিসপোজ করতে হবে যথাযথভাবে।

লাশ বহনের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। লাশ দাফনের পর এবং খাওয়ার আগে ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে ধুতে হবে। ব্যবহৃত যান ও সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করতে হবে। হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধী টীকা নিতে হবে। মৃতদেহ দাফন করার আগে তা জীবাণুমুক্ত করার প্রয়োজন নেই।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ