শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


‘ঈদের নামাজ ঘরে পড়া: নামধারী স্কলারের দেয়া ফতোয়ায় পথভ্রষ্ট হবেন না’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি সাইফুল ইসলাম মাদানী।।।
মুহতামিম: বড় কাটারা মাদ্রাসা, চকবাজার, ঢাকা।

ঈদের নামায ঘরে একাকী পড়া যাবে, মর্মে ফতোয়া দিয়েছেন, একজন ইউটিউবার বাংলাদেশী বক্তা। করোনার পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার শর্ত পূরণ করে মসজিদে ঈদের নামায পড়ার অনুমতি দিয়েছে।

সঠিক মাসআল হল, الحمد لله وبالله التوفيق. ঈদের নামায আহনাফের নিকট ওয়াজিব। জুমআর নামাযের জন্য যে সকল শর্ত প্রযোজ্য, ঈদের নামাযের জন্যও সে সকল শর্ত প্রযোজ্য। বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতি কারফিউ বা শরীয়তে গ্রহণযোগ্য কোনো ওজরের কারণে যদি ঈদের জামাত ঈদগাহে বা মসজিদে করতে অপারগ হয়,সেখানে বাড়ীর আঙ্গিনায়,ছাদে বা বৈঠকখানায় ঈদের নামায পড়া যাবে। এক্ষেত্রে নিন্মের কয়েকটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

ক- জামা‘আতের সাথে (ইমামসহ নূন্যতম ৪জন মিলে) পড়তে হবে। খ- জুমুআর নামাযের ন্যায় "ইজনে আম" (নামাজের সময় যেখানে নামায পড়া হবে, সেখানে যে কোন মুসলমানের প্রবেশাধিকার থাকা)এর শর্ত প্রযোজ্য হবে। গ- আশপাশের মুসলমানদেরকে উক্ত বাড়িতে নামাজের সময়সূচী আগেই জানিয়ে দিতে হবে।

এগুলো জুমার নামাজের ক্ষেত্রেও শর্ত।তবে জুমুয়ার নামাযে খুতবার দেওয়া ওয়াজিব। পক্ষান্তরে, ঈদের নামাযে খুতবা দেওয়া সুন্নত।অর্থাৎ খুতবা দেওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন কেউ না থাকলেও উপরোক্ত শর্ত মেনে কেবল নামায পড়লেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে।এছাড়া জুমুয়ার নামাযে ইকামত দেওয়া সুন্নত। পক্ষান্তরে ঈদের জামাতে একামত নেই।

মোটকথা,ঈদের নামায ঘরে একাকি কোন অবস্থাতেই পড়া যাবে না। যদি কোথাও ওজরের কারণে ঈদের জামা‘আত করা সম্ভব না হয়, সেখানেও একাকি ঈদের নামায পড়া যাবে না। বরং তখন ঈদের নামায মাফ হয়ে যাবে। তবে ঘরে একাকী কিছু নফল নামাজ পরে নিতে পারবে। এটাকে ঈদের নামায মনে করা বা এভাবে একাকী ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে মর্মে ফতোয়া দোয়া শরীয়তের বিকৃতি ঘটানোর অন্যায় বলে গণ্য হবে।

সাহাবাদের যুগেও এই বিষয়টার আমল পাওয়া যায়। যেমন সহীহ রেওয়ায়েতে রয়েছে, আনাস (রাঃ) ঈদের সালাত জামায়াতে না পাওয়ার পর তিনি ঘরে এসে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এমনকি দাস-দাসীদেরকে একত্রিত করে ঈদের নামাজের তাকবীর সহ জামাত করতেন। তবে, সেখানে তিনি ঈদের খুতবা দিতেন না। কোন এক সময়ে আনাস (রা) এর দাস আব্দুল্লাহ বিন আবি উতবাহ দুই রাকায়াত ঈদের সালাতের ইমামতি করেছেন। সহীহ বুখারী, ২/২৩, মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, (৫৮৫৫), মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ (৫৮০৩), সুনানে বায়হাকী (৬২৩৭)।

মোটকথা ঈদের জামাআত করতে না পারলে কোনভাবেই একাকী ঈদের নামায পড়তে পারবে না। সেক্ষেত্রে তার জন্য ঘরে একাকী সালাতুদ দুহা বা চাশতের ২/৪ রাকাত নামায পড়া মুস্তাহাব।

ما ورد عن الصحابة كعلي وابن مسعود، وعن عبيد الله قال:”كان أنس إذا فاتته صلاة العيد مع الإمام جمع أهله فصلى بهم مثل صلاة الإمام في العيد
حسن رواه البيهقي.6237).

عن عبيد الله أن أنس:”كان يكون في منزله بالزاوية، فإذا لم يشهد العيد بالبصرة جمع أهله وولده ومواليه، ثم يأمر مولاه عبد الله بن أبي عتبة فصلى بهم ركعتين”.(صحيح رواه عبد الرزاق.5855).

ورواه البخاري معلقًا، أبواب العيدين، باب: إذا فاته العيد يصلي ركعتين، وكذلك النساء، ومن كان في البيوت والقرى 2/ 23، قبل حديث (987)، ووصله ابن أبي شيبة في مصنفه (5803)، والبيهقي في السنن (6237)

جاء في (المبسوط.السرخسي.39/2): أنها صلاة ما عرفت قربة إلا بفعل رسول الله ﷺ وما فعلها إلا بالجماعة ولا يجوز أداؤها إلا بتلك الصفة وإذا فاتت فليس لها خلف.
وفي الدر المختار مع حاشية ابن عابدين (2/175) (حنفي) : " ولا يصليها وحده إن فاتت مع الإمام " انتهى .

وقد اختار شيخ الإسلام ابن تيمية قول الحنفية ، ورجحه الشيخ ابن عثيمين رحمه الله ، كما في "الشرح الممتع" (5/156) .
فقد كان الرسول صلّى الله عليه وسلّم يُداوم عليها ولا يقطعها ولم يتركها ولو مرّة، واُعتمد على ذلك في قول الحنفية بأنّها واجبة، كما أنّ تأديتها تكون بجماعة، ولو لم تكن كذلك لاستُثنيت كصلاتي التراويح والكسوف.

আরো দেখুন: আদ-দুররুল মুখতার, ৩য় খণ্ড, ৪৫ পৃষ্ঠা রদ্দুল মুহতার(ফতোয়ায়ে শামী), ২য় খণ্ড, ১৭৫ পৃষ্ঠা হাশিয়াতুত ত্বাহত্বাবী ‘আলা মারাকিল ফালাহ; ৫৩৫ ফাতাওয়া তাতারখানিয়া, ২য় খণ্ড, ৬২৩ পৃষ্ঠা ফাতাওয়া মাহমূদিয়া, ১২শ খণ্ড, ৪৬৯ পৃষ্ঠা, ইত্যাদি।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ