শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


লামা সদরে সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মিজানুর রহমান
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি>

বান্দরবান লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলিয়ারছর এলাকায় কাঁচা রাস্তা দীর্ঘদিনেও কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা মাটিতে একাকার হয়ে যায় রাস্তাটি। ফলে ভোগান্তিতে রয়েছেন ওই এলাকার ৪ হাজারেরও অধিক মানুষ। পাকা রাস্তা না থাকায় যুগযুগ ধরে এখনো মাটির রাস্তায় চলাচল করছেন তারা। মেরামতের অভাবে তাও এখন চলাচল অযোগ্য।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজীর দোকান থেকে বরিশাল পাড়া পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা। সড়কটি এ এলাকার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া প্রতিদিন শত শত পাহাড়ী-বাঙ্গালী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ এই রাস্তায় চলাচল করে। কয়েক যুগ আগে নির্মিত এই মাটির রাস্তা কখনো পূর্নসংস্কার হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে চলতি সময়ে এলাকর যুবকদের সমন্বয় গঠিত বান্দরবান লামা সদর ইউনিয়ন কল্যাণ নামে সমিতির সদস্যরা এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে কিছু বালি মাটি দিয়ে মেরামত করলেও মালবাহী ট্রলি ও ট্রাক্টরের কারণে তা তলিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করছেন তারা।

বলিয়ারছর বাজার ব্যবসায়ী মুহা. শহিদুল ইসলাম বলেন, শুকনো মৌসুমে যাতায়াত ব্যবস্থা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল, মাহীন্দ্রা ও সিএনজি ব্যবহার হয়। অনেক কষ্টে ভাঙ্গাচুরা রাস্তায় বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করে এলাকার মানুষ। বর্ষা শুরু হলেই বন্ধ হয়ে যায় ওই সব যানবাহন। পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। মাঝেমধ্যে হোন্ডা আসলেও দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয় আমাদের। সামান্য বৃষ্টি হলে কাঁদামাটিতে একাকার হয়ে যাতায়াতে অযোগ্য হয়ে পরে রাস্তাগুলো।

এলাকার স্থানীয় মুহা. জহির হোসেন জানান, দীর্ঘদিন এই রাস্তার উন্নয়ন বা সংস্কার করা হয়নি। বৃষ্টি হলে রাস্তার অবস্থা নদীর মতো হয়ে যায়। দূর থেকে তাকালে নদী মনে হয়। রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাচল করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের চরম কষ্টে প্রতিষ্ঠানে যেতে হচ্ছে। এ যেন ভোগান্তির শেষ নেই। সবদিক বিবেচনায় এই সড়কগুলো অতি দ্রুত উন্নয়ন করা দরকার। রাস্তাটি উন্নয়ন বা সংস্কার হলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তর মানুষের চলাচল পথ সহজ হবে।

সড়কের এ বেহাল দশা নিয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় আবুল কাশেম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, জন্মের ৩৭ বছর বয়সেও এমন রাস্তা দেখিনি। যখন এ এলাকায় রাস্তা ছিলো না তখনোও এমন অবস্থা ছিল না।

তিনি আরও বলেন, ভাই, কতো রাস্তাই তো ঠিক হয়, কিন্তু আমাদের এ রাস্তাটা ঠিক হচ্ছে না কেন ? বছরকে বছর ধরে এভাবেই পড়ে আছে। দীর্ঘদিন থেকে চলাচলে অনুপযোগী এই সড়কে চলতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটার শিকার হচ্ছেন অনেকই। সড়ক তো নয় যেন মরণ ফাঁদ। এটা সংস্কার করে চলাচল যোগ্য করে তোলার প্রত্যাশা আমাদের।

ইউপির ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মুহা. আব্দুল হাফিজ বলেন, র্দীঘদিন ধরে এ সড়কটি ভেঙে বড় বড় গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে কৃষক ও মানুষ তো দুরের কথা অসুস্থ রোগী, বিশেষ করে ডেলিভারি রোগী নিয়ে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। তাছাড়াও মালামাল পরিবহনে আদায় করতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। এটা বিশাল বাজেটের রাস্তা, সুতরাং সরকারি বাজেট ছাড়া ব্যক্তিগত বাজেট দিয়ে সম্ভব নয়। তাছাড়া চেয়ারম্যান মহোদয় এই সড়কের টেন্ডার হয়েছে বলে জানিয়েছে, কিন্তু লকডাউনের সম্মুখীন হয়ে আর এবিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়নি।

এবিষয়ে সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, সড়কটি সংস্কারের বাজেট অনুমোদন হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক করোনার কারণে কাজ পিছিয়ে গেছে। করোনা তথা লকডাউন শেষ হলে সংস্কারের কাজ শুরু হবে।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ