আবদুল কাইয়ুম শেখ
ইসলামের বিধানের সঙ্গে বিজ্ঞান মিলে গেলে তা বিজ্ঞানের সৌভাগ্য বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সংগ্রামী আমির কারা নির্যাতিত মজলুম জননেতা শাইখুল হাদিস ইবনে শাইখুল হাদিস আল্লামা মামুনুল হক।
তিনি বলেছেন, ইসলামের সঙ্গে কারো যুক্তি সাংঘর্ষিক হলে তার যুক্তিকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। অনুরূপভাবে ইসলামের সঙ্গে বিজ্ঞানের সংঘর্ষ হলে বিজ্ঞান প্রত্যাখ্যাত হবে। কারণ বিজ্ঞানের সূত্র পরিবর্তনশীল। পক্ষান্তরে ইসলাম শাশ্বত, সর্বজনীন ও সর্বকালীন। ইসলামের কোন বিধানের সঙ্গে যদি বিজ্ঞান মিলে যায়, তাহলে তা বিজ্ঞানের সৌভাগ্য; ইসলামের নয়।'
রাজধানীর জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগের খতমে কুরআন ও খতমে বুখারী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার (২৪শে জানুয়ারি) মাগরিবের নামাজের পর এই অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সহীহ বুখারী শরীফের শেষ হাদিসের আলোচনায় আল্লামা মামুনুল হক বলেন, 'আল্লাহ তায়ালা হাশরের ময়দানে মানব জাতিকে একত্রিত করে তাদের আমল ওজন করবেন। যার নেকীর পাল্লা ভারী হবে তাকে জান্নাত প্রদান করা হবে, পক্ষান্তরে যার নেকির পাল্লা হালকা হবে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।' প্রমাণস্বরূপ তিনি কুরআন শরীফের এই আয়াত তেলাওয়াত করেন,
فَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ خَیۡرًا یَّرَہٗ ؕ وَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ شَرًّا یَّرَہٗ
অর্থাৎ, 'কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে, এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে সে তাও দেখবে।' (সূরা যিলযাল, আয়াত: ৭-৮)
তিনি বলেন, আমল দেহ বিশিষ্ট না হওয়া সত্ত্বেও তা ওজন করা সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, 'বাতাস দেহবিশিষ্ট নয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও তার ওজন করা যায়। তাপ দেহবিশিষ্ট নয়, তা সত্ত্বেও এর ওজন করা সম্ভব হয়। ঠিক তেমনিভাবে মহান আল্লাহ মানুষের আমলকেও ওজন করে তার যথাযথ প্রতিদান দেবেন। কেউ যদি এর বিপরীতে যুক্তি দেয়, তাহলে তা প্রত্যাখ্যাত হবে। মনে রাখতে হবে, ইসলামের প্রতিটি বিধান যুক্তি সম্মত। কিন্তু এর কোন বিধান যুক্তির উপর নির্ভরশীল নয়। হযরত আলী রা. বলেন,
لَوْ كَانَ الدِّينُ بِالرَّأْىِ لَكَانَ أَسْفَلُ الْخُفِّ أَوْلَى بِالْمَسْحِ مِنْ أَعْلاَهُ
অর্থাৎ, 'ধর্মের মাপকাঠি যদি মানুষের মনগড়া যুক্তি ও বিবেক-বিবেচনার উপর নির্ভরশীল হত, তাহলে মোজার উপরিভাগের চেয়ে নিচের দিক মাসাহ্ করাই উত্তম হত।' (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৬২)
মাহফিলে মুফতি ফজলুল হক আমিনী রহ. এর জামাতা, কারা নির্যাতিত মজলুম আলেমেদ্বীন, জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগের সিনিয়র মুহাদ্দিস ও শুরা সদস্য মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
বুখারী শরীফের দরস শেষে দেশ-জাতি, গাজা ও সমগ্র বিশ্বের কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়। জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস আব্দুল কাইয়ুম ইসলামবাগী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময় হাজী ইব্রাহীম আলী ও হাজী আব্দুল ওয়াকফ স্টেস্টের এর সম্মানিত মোতাওয়াল্লি সুমাইয়া আশরাফ, সভাপতি, হাজী শহিদুল ইসলাম বাবুল, কমিটির সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, জামিয়ার মুহাদ্দিস, শিক্ষক, ছাত্র, বরেণ্য উলামায়ে কেরাম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
হাআমা/