সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ।। ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১২ জিলকদ ১৪৪৫


প্রজন্মকে ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করতেই আল্লাহর ৯৯ নাম স্তম্ভ স্থাপন : ফেনী পৌরসভার মেয়র

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শহরের প্রাণকেন্দ্রে জ্বলজ্বল করছে মহান আল্লাহর ৯৯টি নামের ভাস্কর্য। একটি দুটি নয়, ৭ হাজার এলইডি লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে এই ভাস্কর্যটি। ১০ ফুট ব্যাস এবং ৩০ ফুট উচ্চতার দৃষ্টিনন্দন স্তম্ভের চূড়ায় বসানো হয়েছে ৪টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন। যেখানে দিন-রাত চলবে ধর্মীয় নানান ভিডিও। সবসময় শান্তির বাণী প্রচার হবে বলে এই চত্বরের নামকরণ করা হয়েছে ‘শান্তি চত্বর’ নামে।

দেশসেরা স্মার্ট পৌর শহর হিসেবে পরিচিত ফেনী পৌরসভার মিজান রোড চত্বরে তৈরি হয়েছে ধর্মীয় এই ভাস্কর্যটি। যার উদ্যোক্তা পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। মেয়র জানান, আগামী প্রজন্মকে মাদক, অশ্লীলতা ও বেহায়পনার বিপরীতে ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ফেনী পৌরসভার অর্থায়নে ইসলামিক ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে। মুসলিম দেশ হিসেবে ইসলামের বিভিন্ন নিদর্শন, আল্লাহ ও রাসূলের নাম মানুষের সামনে উপস্থাপন করা মুসলমান হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকে এই ভাস্কার্যটি স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। এগুলো দেখে মানুষ যাতে আল্লাহ ও রাসূলের এবং ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। এ ছাড়াও ফেনী পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ইসলামিক ভাস্কর্যের মাধ্যমে শহরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশে কাজ করছি। আশা করছি, শহরের আরও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ইসলামিক নিদর্শন স্থাপনের মাধ্যমে মুসলিম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এখান থেকে আরও বেশি উন্মোচিত হবে।

তিনি আরও বলেন, ফেনী একটি শান্তির শহর। আমরা এই শহরে সব মত ও পথের মানুষকে নিয়ে শান্তিতে বাস করতে চাই। আমাদের তরুণ প্রজন্ম এখন মাদক, অশ্লীলতা ও বেহায়পানার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। তাই তাদের খারাপ দিক থেকে ফিরিয়ে ভালো দিকে আনতে হবে। সেজন্য আগামী প্রজন্মকে ধর্মের দিকে আহ্বান করতে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি।

এর আগে রবিবার (১৭ মার্চ) পবিত্র মাহে রমজানের ৬ষ্ঠ রোজার ইফতারির পর উদ্বোধন করা হয় এই ভাস্কর্যটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। এটি ফেনীর পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করবে জানিয়ে এমন উদ্যোগে অংশ নিতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করেন তিনি।

ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, মিজান ময়দানে জেলার সব বড় বড় প্রোগ্রাম হয়। এখানে ঈদের জামায়াতসহ আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলন হয়। সে ময়দানের সম্মুখে আল্লাহর নাম সম্বলিত এ শান্তি চত্বর নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা ধর্মপ্রাণ মুসলমান আমাদের জন্য এসব আবেগের। এমন ভাস্কর্য পৃথিবীর কোথাও নেই। এই প্রথম ফেনীতে এটি স্থাপন হয়েছে। ফেনীর মানুষ শান্তিতে বিশ্বাসী আমরা শান্তিতে থাকতে চাই।

দীর্ঘদিন পর্দার আড়ালে থাকার পর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর বাহারি আলোকসজ্জায় সাজালে ভাস্কর্যটি দেখতে ইফতারের পরই শহরের মিজান রোড এলাকায় জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। এসময় এই উদ্যোগের জন্য মেয়রকে ধন্যবাদ জানায় ফেনীবাসী। সন্তোষ প্রকাশ করেন আলেম ওলামারাও।

এছাড়া, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর রামপুর রাস্তার মাথা এবং মহিপালে আরও দুটি ইসলামিক ভাস্কর্য নির্মাণ করেন মেয়র। এছাড়া শহরের প্রায় সবকটি মোড়ই সাজানো হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহ্যের ভাস্কর্য দিয়ে। দূষণমুক্ত, পরিচ্ছন্ন এবং বাহারি আলোয় সাজানো থাকায় এরইমধ্যে দেশজুড়ে স্মার্ট পৌর এলাকা হিসেবে বেশ পরিচিতি অর্জন করেছে ফেনী পৌরসভা। ফেনী জেলার পর্যটনেও যা যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ