শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ ।। ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
কুতুবখালী খাল পরিষ্কার, পরিবেশবান্ধব নগরীর দাবিতে মানববন্ধন দিল্লির দাসত্বমুক্ত হয়েছি ওয়াশিংটনের গোলামির জন্য নয়: ইবনে শাইখুল হাদিস আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে ১৫ জনের চাকরির সুযোগ! মতিঝিলে তিন তলা ভবনে আগুন বগুড়ায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ মজলিস  ঢাকা সেনানিবাসের প্রবেশপথে বড় নাশকতার পরিকল্পনা, গ্রেফতার ১ রাজধানীর যেসব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা মসজিদগুলো শান্তি রহমত ও নিরাপত্তার প্রাণকেন্দ্র  আফ্রিকার এক দেশকে চাপে ফেলে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের ছক যুক্তরাষ্ট্রের আরব লীগ সম্মেলনে ইসরায়েলের ওপর চাপ বৃদ্ধির আহ্বান স্পেন প্রধানমন্ত্রীর

‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে ভারতের নতুন প্রকল্প, যুক্ত করা হবে সমুদ্রপথে


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়ে বাংলাদেশের। রাজনৈতিক মেরুকরণের পাশাপাশি বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যার প্রভাব পড়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। এ অবস্থায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়েও দেখা যায় বিবাদ।

তাই এবার বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে ভারত। 
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যোগাযোগের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় ভারত এখন নতুন করে মিয়ানমার হয়ে সমুদ্রপথে বিকল্প সংযোগ প্রতিষ্ঠার পথ এগোচ্ছে। গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ‘ভূবেষ্টিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা ‘মহাসাগরের (প্রবেশের) একমাত্র অভিভাবক।

’ এরপর থেকেই এই অঞ্চল নিয়ে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ভারত। ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা এই প্রকল্পটিকে ‘জবাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। 

প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়,  মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত ১৬৬.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার।

এটি এনএইচ-৬ মহাসড়কের অংশ হিসেবে নির্মিত হবে। শিলং থেকে শুরু হয়ে এই সড়কটি যাবে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত। প্রকল্পটি ভারতের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়ন করছে ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড। ২০৩০ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে মিয়ানমারে ইতোমধ্যে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প।

এ প্রকল্পের আওতায় কলকাতা সমুদ্রবন্দর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। সিত্তে থেকে কালাদান নদীপথে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুই পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। নতুন শিলং-শিলচর মহাসড়ক এই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সম্প্রসারিত করবে এবং জোরিনপুই থেকে লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত সংযুক্ত হবে।

বর্তমানে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর একমাত্র স্থল সংযোগ শিলিগুড়ি করিডর, যা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত। এছাড়া বাংলাদেশ ও মিয়ানমার হয়ে বিকল্প পথ রয়েছে, তবে বাংলাদেশ সম্প্রতি বঙ্গোপসাগর পথে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং আঞ্চলিক জলপথে তাদের প্রভাব বজায় রেখেছে। ফলে বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প গ্রহণ করে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর সড়ক চালু হওয়ার আগেই পুরো যোগাযোগব্যবস্থাটি কার্যকর হবে। এই প্রকল্পে সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করা হবে আধুনিক প্রযুক্তি। জটিল পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য স্লোপ স্ট্যাবিলাইজেশন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে।

গত ৩০ এপ্রিল ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা প্রায় ২২,৮৬৪ কোটি রুপি ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। ১৪৪.৮ কিলোমিটার পড়েছে মেঘালয়ে এবং ২২ কিলোমিটার পড়েছে আসামে। প্রকল্পটি চালু হলে শিলং থেকে শিলচরের যাত্রাপথ সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমে পাঁচ ঘণ্টায় নেমে আসবে।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ