সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ।। ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১২ জিলকদ ১৪৪৫


মানসিক যন্ত্রণা লাঘবের দোয়া ও আমল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

নানাবিধ দুশ্চিন্তা ও হতাশার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়, এটাকে মানসিক চাপ বলে। মুসলমান হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি, পৃথিবীতে মানসিক চাপসহ এমন কোনো রোগ নেই যার চিকিৎসা সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহ তায়ালা দেননি।

মানসিক চাপ উত্তরণে ইসলামে রয়েছে অনেক দিকনির্দেশনা। অতএব কখনো মানসিকভাবে যন্ত্রণা অনুভব করলে তাৎক্ষণিক কিছু আমল করা যেতে পারে। আশা করা যায়, কিছুটা হলেও ভালো লাগবে- ইনশাআল্লাহ।

আবু সাঈদ আল-খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসুল সা. মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে আবু উমামাহ নামক এক আনসারি সাহাবিকে দেখতে পেয়ে তাকে বলেন, হে আবু উমামাহ, কী ব্যাপার! আমি তোমাকে নামাজের ওয়াক্ত ছাড়া মসজিদে বসে থাকতে দেখছি? তিনি বলেন, সীমাহীন দুশিন্তা ও ঋণের বোঝার কারণে হে আল্লাহর রাসুল।

তিনি বলেন, আমি কি তোমাকে এমন কিছু বাক্য শিখিয়ে দেব না, তুমি তা বললে আল্লাহ তোমার দুশ্চিন্তা দূর করবেন এবং তোমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও করে দেবেন? তিনি বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল। তিনি সা. বলেন, তুমি সকাল-সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দোয়া বলবে।’

...আবু উমামাহ (রা.) বলেন, আমি তা-ই করলাম। ফলে মহান আল্লাহ আমার দুশ্চিন্তা দূর করলেন এবং আমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও করে দিলেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৫৫)

দোয়াটি হলো -

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ العَجزِ وَالكَسَلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الجُبنِ وَالبُخلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ غَلَبَةِ الدَّينِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুজনি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া আউজুবিকা মিন গলাবাতিদ দাইনি ওয়া কহরির রিজাল।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা থেকে আশ্রয় চাই। আমি আশ্রয় চাই অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, আপনার কাছে আশ্রয় চাই ভীরুতা ও কার্পণ্য থেকে, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের রোষানল থেকে।

আমলগুলো হলো-

১. খুব বিনয়ের সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করা।

২. নিরবে-নিভৃতে আবেগ ও ভালোবাসার সঙ্গে কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত করা।

৩. নিরিবিলি পরিবেশে কিছু সময় অর্থের দিকে লক্ষ্য রেখে আল্লাহর জিকির করা।

৪. জনমানবহীন স্থানে বসে আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনায় মগ্ন হওয়া।

৫. বেশি পরিমাণে ‘ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়ুমু বিরাহমাতিকা আস্তাগিসু’ পড়তে থাকা।

৬. দোয়া ইউনুস অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জালিমিন পড়া।
৭. কোনো এতিম-মিসকিনের সঙ্গে কিছু সময় কাটানো, তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া, খাবার দেওয়া ও মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে আদর করা।

৮. পারলে কবরস্থানে গিয়ে কিছু সময় কাটানো।

৯. মৃত্যু নিয়ে খুব গভীরভাবে চিন্তা করা।

১০. নিজের অবস্থানের তুলনায় একটু কষ্টে ও সামাজিকভাবে নিচুতে বসবাসকারীদের কথা মনে করা।

এগুলো করলে মন প্রশান্ত হয়, স্থির হয়, দুনিয়ার বাস্তবতা বুঝে আসে, দয়াময় আল্লাহর দিকে মন ধাবিত হয় এবং আখেরাতমুখী জীবনযাপনে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। প্রায় প্রতিটি বিষয়ের পক্ষে কুরআন-হাদিসের দলিল আছে। আমল করুন, উপকৃত হবেন- ইনশাআল্লাহ।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ