শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ ।। ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ ।। ২১ মহর্‌রম ১৪৪৬


ফরজ হজ আদায় না করে কেউ মারা গেলে করণীয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হলো হজে বায়তুল্লাহ। ঈমান, নামাজ, জাকাত ও রোজার পরই হজের স্থান। হজ মূলত কায়িক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর হজ পালন করা ফরজ।

আর্থিক সক্ষমতার পাশাপাশি হজের জন্য আরও পাঁচটি শর্ত থাকতে হবে। তাহলো, মুসলমান হওয়া, জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া, প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া, স্বাধীন হওয়া, সামর্থ্য থাকা। এই শর্তগুলোর মাধ্যমে কারো ওপর হজ ফরজ হলে তার জন্য যত দ্রুত সম্ভব হজ মৌসুমে হজ পালন করে নেওয়া।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করার ইচ্ছা করে, সে যেন তাড়াতাড়ি আদায় করে নেয়। কারণ যেকোনো সময় সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে বা বাহনের ব্যবস্থাও না থাকতে পারে; অথবা অন্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।’

(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৮৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৮৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৭৩২)

এক হাদিসে হজরত উমামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, কোনো জরুরি প্রয়োজন, জালেম সরকারের বাধা বা কঠিন রোগ-ব্যাধির কারণ ছাড়া যদি কেউ (হজ ফরজ হওয়ার পরও) হজ না করে মারা যায়, তাহলে সে যেন ইহুদি বা খৃষ্টান হয়ে মারা যায়। (দারেমি, হাদিস : ১৮২৬; বায়হাকি, হাদিস : ৩৬৯৩)

সুতরাং কারো ওপর হজ ফরজ হলে তা দ্রুত আদায় করে নেওয়া উচিত। তবে কোনো ব্যক্তির শারীরিক অসুস্থ হলে তার পরিবর্তে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি হজ আদায় করানো উচিত। অথবা নিজের জীবদ্দশায় বদলি হজের অসিয়ত করে যেতে হবে।

কিন্তু কেউ যদি অন্যকে দিয়ে বদলি হজের অসিয়ত করানোর আগেই ইন্তেকাল করেন, তাহলে তার ওয়ারিশদের কর্তব্য হলো তার সম্পদ থেকে তার পক্ষ থেকে কাউকে দিয়ে বদলি হজ আদায় করানো।

আর মৃত্যুর পর সেই ব্যক্তির সম্পদ না থাকলে বালেগ ওয়ারিসদের স্বতঃস্ফূর্ত ব্যয়ের মাধ্যমে এই হজ করানো উচিত।

হাদীস শরিফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, এক মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, আমার মা মান্নত করেছিলেন যে, তিনি হজ করবেন। কিন্তু তা পূর্ণ করার আগেই তিনি মারা গেছেন। (এখন আমার করণীয় কী?)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ আদায় করে নাও। বল তো, যদি তোমার মা কারো নিকট ঋণী হতেন তুমি কি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? মহিলাটি বলল, হ্যাঁ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর। কেননা তিনি প্রাপ্য পাওয়ার অধিক হকদার। (সহিহ বুখারি, ১/২৪৯; আলমানাসিক ৪২, ৪৩২; গুনইয়াতুন নাসিক ২০)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ