সোমবার, ০৫ মে ২০২৫ ।। ২২ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৭ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে হাইআতুল উলয়ার প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ লাল কেল্লার মালিকানা চেয়ে মোগল সম্রাটের ‘বংশধরের’ দাবি খারিজ ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সেনানীদের ভীত-সন্ত্রস্ত করার হীন অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে’ শাপলায় শহীদদের স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশের দাবি ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক আজ ৫ই মে ঐতিহাসিক গণহত্যা দিবস: আমাদের চোখ খুলবে কবে? স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ ‘২৫ মার্চের কালরাতকেও হার মানিয়েছে শাপলা চত্বরের গণহত্যা’ কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দিতে হবে : স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন

কলড্রপ, প্যাকেজ ও এসএমএস প্রতারণায় অসন্তুষ্ট গ্রাহক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

btrc-1আওয়ার ইসলাম: মঙ্গলবার রমনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি কর্তৃক এই প্রথমবারের মতো এক গণশুনানির আয়োজন করে।

গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রশ্নের যথাযথ জবাব দানের জন্য মোবাইল অপারেটর ও  টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও আদতে তারা কেউই উপস্থিত ছিলেন না।

বিকাল পৌনে ৪টা থেকে প্রায় ঘন্টা দুইয়েকে ৩৪ জন গ্রাহক তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। কলড্রপ ও বিভিন্ন প্যাকেজ (ভয়েস, ডেটা, বান্ডল) এবং এর মূল্য সম্পর্কে অভিযোগ ছাড়াও বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন, মোবাইল অপারেটরদের কলসেন্টারের সেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

সুলভ মুল্যে ইন্টারনেট সেবা দিতে বিটিআরসিকে পদক্ষেপ নেওয়ারও সুপারিশ আসে গণশুনানিতে।

btrc-2

বাংলাদেশ মুঠোফোন অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘কলড্রপে গ্রাহকরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। এছাড়া ৪৯ বা ৮৯ টাকা ইত্যাদি রিচার্জ অফারে অতিরিক্ত এক টাকা করে কেটে নিচ্ছে রিটেইলাররা। এতে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে।’

একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত্ব মোবাইল অপারেটর টেলিটককে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান মোবাইল ফোন রিচার্জ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু।

‘টেলিটকের নেটওয়ার্কে উন্নতি না করায় বিদেশি অপারেটররা কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিটিআরসির পাওনা পৌনে পাঁচশ কোটি টাকা না দেওয়ায় গত ২১ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতিতে আদালতের নির্দেশে ১৭ দিন পর সিটিসেলের সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রমোশনাল এসএমএস বিষয়ে রফিকুল বলেন, “গ্রাহকদের বিরক্ত করার অধিকার অপারেটরদের নেই। এই সব এসএমএস যদি দিতে হয় তাহলে গ্রাহককে টাকা দিয়ে দিতে হবে।”

অনাকাঙ্ক্ষিত এসএমএস নিয়ে একই অভিযোগ করেন মো. রুবেল ও রাফায়েত নোমান দুজন গ্রাহক।

স্পাসহ নানা ‘আপত্তিকর’ বিষয় নিয়েও এসএমএস দেওয়া হচ্ছে বলে জোড়ালো অভিযোগ তাদের।

আবুল বাশার নামে গ্রামীণফোনের একজন গ্রাহক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এই অপারেটর ‘ভালো ভালো’ নম্বরগুলো বন্ধ করে দিয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে। সিম নিলেও সেই সিম ১৫ মাসেও চালু হয়নি।

‘গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ারের সেবা অনেক নিচে নেমেছে কারণ তারা শ্যালক দুলাভাইকে এসব চাকরি দিয়েছে।’

btrc-3

বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে নিজের নম্বর হারানোর কথা জানান অপারেটর রবি’র গ্রাহক আবুল হাসনাত।

তিনি বলেন, বিদেশ সফর থেকে ফিরে এসে দেখেন তার মোবাইল নম্বরটি আর তার নেই। ‘যে কাগজপত্র ছিল তা দিয়ে তা আর তুলতে পারিনি।’

বিলকিস ইরানী নামে বাংলালিংকের পোস্ট পেইড গ্রাহক অভিযোগ করেন, পোস্ট পেইড সিম কেনার সময় ক্রয় মূল্যে ৬০০ টাকা বান্ডল হিসেবে দেবে বলেও তারা তা দেয়নি। এই সিমে ৭০০ টাকা লিমিট পার হয়ে গেলে আউট গোয়িং এর পাশাপাশি ইনকামিংও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অনাকাঙ্খিত ও অবাঞ্ছিত।

আমিনুল ইসলাম নামে এক গ্রাহক বলেন, “রাত্রীকালীন প্যাকেজ দিয়ে অপারেটরটা তরুণ প্রজন্মকে ঘুর পথে ধাবিত করছে।”

অপারেটররা অযাচিত প্যাকেজ ও শর্ত দিয়ে গ্রাহকদের প্রতারিত করছে বলে অভিযোগ করেন মোবাইল ফোন ব্যাংকিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এইচ এম বদরুদ্দোজা।

কামরুন নাহার নামে আরেক গ্রাহক বলেন, ইন্টারনেট প্যাকেজের মেয়াদ যেন না থাকে, তাহলে গ্রাহকদের সুবিধা হবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ টাকায় এক জিবি ইন্টারনেট দিতে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেন মো. গনি মিয়া নামে এক ছাত্র।

জাতীয় পরিচয়পত্রে আঙুলের ছাপ না থাকায় বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন করতে না পারার কথা বলেন গ্রামীণফোনের গ্রাহক সাবের আলী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম হ্যাপী বলেন, তার বিশ্ববিদ্যালয়ে হলগুলোতে রুমের মধ্যে গ্রামীণফোন বা বাংলালিংকের কোনো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না।

গণশুনানি শেষে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, প্রতি ছয় মাস পরপর এ্‌ই ধরনের গণশুনানির আয়োজন করা হবে। ঢাকার বাইরে এ ধরনের অনুষ্ঠান করা যায় কি না তাও ভেবেচিন্তে দেখা হচ্ছে।

গ্রাহকদের প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘অপারেটরদের সেবার মান নিয়ে নজরদারি করতে যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হচ্ছে, কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিয়ে একটি পৃথক ল্যাব করা হবে।’

 btrc-1

ভয়েস মেইল জনপ্রিয় করতে খুব সাশ্রয়ী মূল্যে ভয়েস সেবা দিতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বিটিআরসি প্রধান বলেন, ‘আগামী দুই থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে এ সুবিধা নিয়ে আসতে পারব।’

অনাকাঙ্ক্ষিত এসএমএস বিষয়ে বিটিআরসি মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী বলেন, এসব এমএমএস দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহককে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি না তা বিবেচনা করা হবে। গ্রাহকরা যাতে এসব এসএমএস ইচ্ছেমত বন্ধ করতে পারে সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।

এ সময় বিটিআরসি’র অন্যান্য কমিশনার ও বিভাগের মহাপরিচালকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

এবিআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ