দীর্ঘ সময় দিল্লির মসনদে ছিলেন মোগল সম্রাটরা। কিন্তু এত দিন পর এসে নিজেদের মোগলদের বংশধর বলে দাবি করে সুলতানা বেগম নামের এক নারী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তিনি দাবি করেন, তিনি শেষ মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের প্রপৌত্রের বিধবা স্ত্রী। আর সেই সূত্রেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে দাবি করে বসেন, লাল কেল্লা তাদের।
তাই তাকে সম্পত্তির অধিকার দেওয়া হোক। যদিও তার মামলা সোমবার খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের শীর্ষ আদালত।
সুলতানা বেগমের আবেদনকে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি পি ভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ।
প্রধান বিচারপতি জানান, প্রাথমিকভাবে দাখিল করা রিট পিটিশনটি ভিত্তিহীন।
এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এর পরই সুলতানার আইনজীবী বলেন, আবেদনকারী দেশের প্রথম স্বাধীনতাসংগ্রামীর পরিবারের সদস্য। পাল্টা জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, শুধু লাল কেল্লাই কেন চাই? ফতেপুর সিকরি কেন নয়, সেটাই বা বাদ দেওয়া হলো কেন? এ কথা জানিয়ে মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেটি খারিজ করে দেন আদালত।
সুলতানা বেগম পিটিশনে দাবি করেন, ১৮৫৭ সালে প্রথম স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ব্রিটিশরা তার পরিবারকে তাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছিল এবং সম্রাটকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল।
এ ছাড়া লাল কেল্লার দখল জোর করে মোগলদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরো দাবি করেন, লাল কেল্লার মালিক তিনি। কারণ তিনি এটি তার পূর্বপুরুষ বাহাদুর শাহ জাফরের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। বাহাদুর শাহ জাফর (দ্বিতীয়) ১৮৬২ সালের ১১ নভেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান।
পিটিশনে আরো বলা হয়েছে, আবেদনকারীকে লাল কেল্লার অধিকার হস্তান্তর করতে হবে বা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
১৮৫৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সরকার যে লাল কেল্লা দখল করে আছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয় আবেদনে।
এর আগে লাল কেল্লার দাবি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রথমে সিঙ্গল বেঞ্চে মামলাটি খারিজ হয়ে গিয়েছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লি হাইকোর্টেও বিচারপতি বিভু বখরু ও তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চেও মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। সেই সময় সিঙ্গল বেঞ্চে মামলাটি খারিজ হওয়ার পর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে দেরি হওয়ার কারণে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়।
ডিভিশন বেঞ্চ জানান, আড়াই বছরের বেশি সময় পর এই আবেদন করা হয়েছে, যা মেনে নেওয়া যায় না। বেগম সুলতানা জানান, তিনি তার অসুস্থতার জন্য এবং তার মেয়ের মৃত্যু হওয়ায় আবেদন জানাতে পারেননি। এই আবেদন অপ্রাসঙ্গিক বলেও উল্লেখ করেন আদালত।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
এমএইচ/