শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


সারাদেশে সুষ্ঠুভাবে দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষা অনুুষ্ঠিত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ
আওয়ার ইসলাম

ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্ন পাঠানোর পর সারাদেশে দাওরায়ে হাদীসের (তাকমিল) আজকের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকাল নয়টায় কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার মারকাযগুলোতে প্রশ্ন পাঠানো শুরু হয়। প্রশ্ন পাওয়ার পর ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

৬টি কওমি মাদরাসাভিত্তিক শিক্ষাবোর্ড থেকে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর কেন্দ্রীয় এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্ন পাঠানোর পর সারাদেশে পরীক্ষা কার্যক্রম কেমন হয়েছে জানতে চাইলে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর সদস্য মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া বলেন, খুবই কার্যকর হয়েছে এটি। সারাদেশের পরীক্ষার্থীরাও পদ্ধিতেতে বেশ খুশি। এর দ্বারা অবশ্যই প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব।  সামনের পরীক্ষাগুলো আমরা এ পদ্ধতিতেই প্রশ্ন পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।

সামনের পরীক্ষাগুলোতে কোন পদ্ধতিতে প্রশ্ন পাঠানো হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হাইয়াতুল উলয়ার আরেক সদস্য মাওলানা মুসলেহুদ্দিন রাজু বলেন, আজকের পদ্ধতিই অবলম্বনের ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আছে। যদি এ পদ্ধতিতে প্রশ্নফাঁস না হয় তাহলে সামনের গুলোতেও এমনটা করা যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গত ২৫ এপ্রিল হাইয়াতুল উলইয়া এর অধীনে চলমান দাওরায়ে হাদীসের (তাকমিল) আবু দাউদ শরিফের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

পরীক্ষা স্থগিত ও প্রশ্নফাঁসের ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় (২৫ এপ্রিল) মাগরিবের পরে জরুরি বৈঠক করেছেন কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি ‘আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয় হাইয়া কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্তগুলো হলো, শুক্রবারের (২৬ এপ্রিল) পরীক্ষা হবে না। শনিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে আগের রুটিনে যথানিয়মে পরীক্ষা চলবে। আবু দাউদ শরীফের পরীক্ষা ১ মে অনুষ্ঠিত হবে। ত্বহাবী শরীফের পরীক্ষা ২ মে (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২ টায় থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ৩ মে পরীক্ষা শেষ হবে।

এর আগে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠায় সম্মিলিত কওমি মাদরাসা শিক্ষা বিষয়ক সংস্থা ‘আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ চলমান দাওরায়ে হাদীস (তাকমিল) পরীক্ষা বাতিল হওয়ার পর গত ২৩ এপ্রিল (মঙ্গলবার) থেকে পুনরায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসায় ভাসছে হাইয়াতুল উলয়ার নেতৃবৃন্দ

এদিকে নতুন এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। সাথে সাথে এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ায় হাইয়াতুল উলয়ার নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনেকে।

ফয়জুল করিম নামে একজন তার ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন, একটি টিম সকাল সাতটায় বসবে প্রশ্ন তৈরির জন্যে। প্রশ্ন তৈরি করে ঠিক নয়টায় ইমেইলের মাধ্যমে বা হোয়াটসঅ্যাপে কেন্দ্রের জিম্মাদারের কাছে পাঠানো হবে। ছাত্ররা এর আগে ৮.৪৫ মিনিটে হলে প্রবেশ করবে। কেন্দ্রের জিম্মাদার এটি সাথে সাথে প্রিন্ট করে বিতরণ করবেন। প্রিন্ট করতে যতক্ষণ ব্যয় হবে এটা ছাত্রদেরে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে। এই পদ্ধতিতে ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। ফাঁস হলেও ক্ষতি নেই। কারণ ছাত্ররা হলের ভেতরেই বন্ধি, প্রতিদিন এই পদ্ধতিই চলবে।

আবিরু সাবীল নামে আরেকজন লিখেছেন,হাইয়াতুল উলয়া এর বর্তমান পদক্ষেপ এর জন্য তাদেরকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে যারা তীর্যক মন্তব্য করছেন, বা এর সম্ভাব্য সমস্যা নিয়ে যারা বিশ্লেষণ করে যাচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করুন। তারাই গাদ্দার, তারা উলামায়ে কেরামের সময়োচিত সিদ্ধান্তে হতাশ।

উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদে ‘কওমি মাদরাসা সমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এর সনদকে আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর অধীনে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল ২০১৮’ পাস করার পর প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল ২০১৭ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি শিক্ষা সনদের মান ঘোষণা করার পর হাইআতুল উলয়ার অধীনে ৬ বোর্ডের সম্মিলিত দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা ইতোপূর্বেও দুইবার (১৬-১৭ ও ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

150776

আরএম/


সম্পর্কিত খবর