শামসুল আরেফীন শক্তি
১. শরয়ি আদালত প্রতিষ্ঠা হবে। সেখানে সর্বপ্রকার বঞ্চনা ও জুলুমের সমাধান পাবে দ্রুত ও ন্যায্য। শরিয়া আদালত কারও ভ্রুকূটিতে প্রভাবিত হয় না। কারণ এটা ধর্মীয় কোর্ট, ধর্ম সবার জন্য সমান, রাজার জন্যেও। স্বামী জালেম হলে আদালত পৃথক করে দেবার এখতিয়ার রাখে, স্বামী না চাইলেও আদালত বাধ্য করতে পারে।
২. নারী পাবে পৃথক স্কুল, পৃথক কলেজ, পৃথক নারীবান্ধব শিক্ষাপদ্ধতি ও শিক্ষাক্রম। পৃথক ট্রান্সপোর্ট।, পৃথক মেডিকেল কলেজ, পৃথক হাসপাতাল। পৃথক শপিং মল/ ফ্লোর। সৃষ্টি হবে নারীর জন্য স্বতন্ত্র ও নিরাপদ বিপুল কর্মসংস্থান। গবেষণায় এসেছে পুরুষশংকুল কর্মস্থলে নারী উচ্চ-স্ট্রেসবিশিষ্ট অবস্থায় থাকে। এই অবস্থার নিরসন হবে।
৩. সকল বিধবা, দুস্থ, নিঃস্ব নারী পাবে রাষ্ট্রীয় ভাতা। ইসলামী সমাজ সকলের জন্য উপযুক্ত পরিবার প্রদানে সচেষ্ট হবে। নিজেদের কোন মেয়ে অবিবাহিত পড়ে রয়েছে, এটা মুসলিম গায়রতমন্দ পুরুষদের জন্য অপমানের।
৪. নারী পাবে শরীর-মনের সাথে মিলিয়ে পৃথক কর্মঘণ্টা, পৃথক বেতন স্কেল। ইলম ও জ্ঞানে আগ্রহী ও পারিবারিক ব্যস্ততাহীন নারীরা পাবেন স্পেশাল ব্যবস্থা। যেমন: সন্তানরা বড় হয়ে গেলে গ্রাজুয়েট করা, ডাক্তারদের পোস্টগ্রাজুয়েট করার ব্যবস্থা ও প্রয়োজনবোধে চাকরি/ রাষ্ট্রের খেদমত।
৫. পতিতাবৃত্তি-সহ নারীকে হীনকারী যত পেশা, সব নির্মূল করে তাদের সম্মানজনক পেশা, প্রশিক্ষণ কিংবা ভাতা দিয়ে পুনর্বাসন। ইউরোপে পতিতারা সবচেয়ে বেশি শারীরিক প্রহারের শিকার হয়, সবচেয়ে জুলুম-বঞ্চনার পেশা এটা।
৬. সম্পত্তির অধিকার নারীর জন্য ফরজ হক। ইসলামি শাসন ফরজের ব্যাপারে আপোষহীন। ফরজ নিশ্চিত করতে যত ধরনের শক্তি ব্যবহার করতে হয়, ইসলামি রাষ্ট্র করবে।
৭. যেকোনো অপরাধের দ্রুত ও নিশ্চিত বিচার হবে। নিশ্চিত বিচারের ইনসাফময় কালচার গড়ে উঠবে। যৌন হয়রানি, ধর্ষণের মতো অপরাধগুলো শূন্যে নেমে আসবে। প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত ও প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের সামাজিক প্রভাব সমাজে থাকবে।
৮. হিজড়া/যৌনপ্রতিবন্ধীদের সমাজে মূলধারায় আনা হবে। পরীক্ষানিরীক্ষা করে তাদের নারী/পুরুষের যেকোন একদিকে ফেলা হবে। পেশা, উত্তরাধিকার, বিবাহশাদী করবে স্বাভাবিক মানুষের মতো।
৯. নারী একটা সমাজের সম্মানের প্রতীক। নারীর অপমান মানে সমাজের অপমান। ইসলামী সমাজে মুসলমান পুরুষ রক্ত দিয়ে রক্ষা করবে নারীর সম্মান।
১০. এতসব পেতে নারীকে করতে হবে কেবল একটা কাজ। সেটা হল: ইসলামের বিধি-বিধানের সামনে পূর্ণ আত্মসমর্পণ। শরীয়ার সামনে আত্মবিলীন এবং শরীয়া প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন হতে হবে। নারীবাদ নামক নারী-হীনকারী মতবাদ, তন্ত্রমন্ত্র থেকে নারীকে ফিরে আসতে হবে ইসলামের ছায়ায়।
নারীবাদ হলো খারাপ পুরুষদের বানানো মতবাদ, যা নারীকে খারাপ পুরুষদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। নারীর সুরক্ষাকবচগুলোকেই (পরিবার-সমাজ-ধর্ম-বাবা-স্বামী) ঘৃণা করতে শেখায়, যাতে সে সেটা খুলে ফেলে নিজেই।
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের চেয়ে বেশি অধিকার যদি কেউ দিতে চায়, সেটা অধিকার নয়, সেটা ফাঁদ। এই পুঁজিপতিরা নারীকে কখনোই আল্লাহর চেয়ে বেশি ভালোবাসে না।
লেখক: চিকিৎসক, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট
এনএইচ/