|| আবু সাঈদ ||
কিছুদিন আগে ফজলুর রহমানের একটি সাক্ষাৎকারের প্রতিবাদ করে আমি সিরিজ আকারে কয়েকটি পোস্ট দিয়েছিলাম। আমার এলাকারই ছোট বড় কিছু ভাই বেরাদর রে রে করে ওঠলো। মুখ ভার করে বলল, 'ফজলুর রহমান একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা। রণাঙ্গনের সৈনিক।' তারা বলতে চাইল ‘তার সম্পর্কে সাবধানে কথা বলা উচিত।’ আমার এক শ্রদ্ধেয় তো বলে বসলেন- ‘আমি নাকি ফজলুর রহমান ফোবিয়ায় ভুগছি।’
ফজলু যে একজন কুজাত, কমজাত, ইতর টাইপের লোক তারা সেটি একেবারেই মানতে নারাজ। ফজলুর ভদ্রলোক হওয়ার একমাত্র দলিল তাদের কাছে, সে মহান মুক্তিযোদ্ধা। যদিও মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হওয়া ছাড়া তার সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কোনো প্রমাণ নেই।
জানি না আমার সেই ভাইদের ভুল ভাঙছে কী না? নাকি দলের দোহাই দিয়ে দুর্গন্ধময় ডাস্টবিনের পাশেই হাটু গেঁড়ে বসে থাকবেন তারা। তার সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা শুরু থেকেই পরিষ্কার ছিল।
কয়েক বছর আগে তারই আরেক আওয়ামী সতীর্থ গোলাম মওলা রনি এমন বিষ্ঠা ঝেড়েছিল মুখ থেকে। তখন আমি লিখেছিলাম, ‘রনিরা তো সবসময়ই বর্ণচোরা। আমরা মাঝেমধ্যে তাদের চিনতে ভুল করি কিংবা চেনা চেহারাও ভুলে যাই। যার ভাষা এতো নোংরা সে কতটা নীচ আর কতোটা ইতর! তা সহজেই অনুমেয়।
আমার তো মনে হয়, ওরে পায়খানার টাংকিতে ফেলে দিলে ওর দুর্গন্ধে পায়খানাও ওরে বমি করে ফেলে দিবে। ছিঃ ওয়াক থু!’
বুদ্ধিজীবিতা, ৭১ এর চেতনাবাজি এবং শেখ মুজিবের আদর্শিক সন্তান হিসেবে নিজেকে জাহির করতে গিয়ে ফজলু গণবিরোধী, ধর্মবিরোধী, ইসলাম, আলেম-ওলামা, ধর্মীয় সিম্বল ও ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে এমন নির্লজ্জ বিষোদগারের পথ বেছে নিয়েছে; যা তাকে অতি অল্প সময়ে গণধিকৃত বিতাড়িত তসলিমা নাসরিনের হারানো জমজের স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।
তার মতো বুদ্ধিজীবীদের লক্ষ্য করেই ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন বলেছিলেন, ‘বুর্জোয়া শ্রেণির পদলেহী যে শিক্ষিত শ্রেণি, তারা নিজেদের জাতির মগজ মনে করেন। কিন্তু তারা মূলত পুঁজির পা চাটেন। তারা কোনোভাবেই মগজ নন। তারা হচ্ছেন জাতির বিষ্ঠা।’
ফজলুর রহমান জাতির মগজ হয়ে ওঠতে পারেনি। সে জাতির বিষ্ঠা। তার ব্যাপারে চিরাচরিত সেই প্রবাদ কথাই প্রযোজ্য যে, ‘দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য।’
তার আদর্শটা কী একটু চিন্তা করেন। সে ইউনূস সরকারের বিরোধিতা করে। অথচ ইউনূস সরকারের চরম বিতর্কিত নারী কমিশনের প্রস্তাবনাকে কোনোরকমের যদি-কিন্তু ছাড়াই শতভাগ সমর্থন করে।
সে বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতির কথা বলে ইসলামী বিভিন্ন বিষয়ের বিরোধিতা করে। অথচ নারী কমিশনের প্রস্তাবনায় সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার, বেশ্যাবৃত্তির প্রস্তাব আছে। এগুলোর ব্যাপারে তার কোনো আপত্তি নেই। এগুলোই কি ফজলুর বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি? কই আমরা তো এমন সংস্কৃতি বাংলাদেশে দেখিনি?
এই বিপজ্জনক বিষ্ঠাকে কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখপাত্র বলতে চায়, তার মতো আদর্শহীন, নৈতিকতা বিবর্জিত মানুষ যদি মুক্তিযোদ্ধাদের রিপ্রেজেন্ট করে তাহলে একাত্তরকে জাতির সামনে কলঙ্কিত করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির কি কোনো প্রয়োজন আছে?
তার এক অদ্ভুত পরিচয়। সে নাকি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। যার বক্তৃতাজুড়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারুণ্যের অহংকার জনাব তারেক রহমানের নাম উচ্চারিত না হলেও শেখ মুজিবুর রহমান, বাহাত্তরের সংবিধান (যা সংশোধন করেছিলেন স্বয়ং জিয়াউর রহমান) আর আওয়ামী লীগের গুণকীর্তন খুব জোরালোভাবেই উল্লেখ হয়। কিম্ভূতকিমাকার। হাস্যকর ব্যাপার।
সবশেষে বলতে চাই, ‘পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে।’ ফজলুর রহমানেরও বুদ্ধিজীবিতার খাহেশ জেগেছে গণধিকৃত, অবাঞ্চিত ও বিতাড়িত হওয়ার জন্য।
লেখক: মাদরাসা শিক্ষক, লেখক ও অনুবাদক
এমএইচ/