মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
যারা গ্রামে বেড়ে উঠেছেন তাদের কাছে তালের শাঁস সুপরিচিত একটি ফল। কেননা, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই থাকে এক বা একাধিক তালগাছ। কাচা তালের মধ্যে থাকা নরম জলীয় অংশটি তালশাঁস নামে পরিচিত। বরফের মতো স্বচ্ছ বলে এটাকে অনেকে আইস অ্যাপেলও বলে থাকেন। মুখরোচক এই ফলটি খেতেও যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর।
পুষ্টি উপাদান
তালশাঁসে প্রায় ৯০ শতাংশ পানি থাকে। তাই এই গরমে পানির চাহিদা পূরণে তালশাঁস রাখতে পারে দারুণ ভূমিকা। এই ফলে আছে অনেকগুলো ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান--যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। তালশাঁসে ক্যালসিয়াম, ফটাসিয়াম, ফ্যাট, সোডিয়াম, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন সহ আরও কিছু উপকারী উপাদান রয়েছে।
তালশাঁসের ওষুধিগুণ
তালশাঁস একটি ঠান্ডা জাতীয় ফল। তাই তালশাঁস খেলে পেটে শীতল এক অনুভূতি হয়। আরামদায়ক অনুভূতির পাশাপাশি এটি আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ করে পানি শূন্যতা রোধ করে। যারা প্রায়শই পেটের সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য তালশাঁস একটি উপকারী ফল। যাদের ঘনঘন ঢেকুর উঠে তালশাঁস তাদের ঢেকুরের মাত্রা কমিয়ে দেয়। দূর করে বমি বমি ভাবও। তালশাঁস মানসিক রোগ প্রতিরোধেও দারুণ কার্যকরী। এতে এমন কিছু ঔষুধি গুণ রয়েছে যা মানসিক সুস্বাস্থ্য ঠিক রাখে। মুখের রুচি ফেরাতেও তালশাঁসের জুড়ি মেলা ভার। তালশাঁস সোডিয়াম, পটাশিয়াম সহ শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য ঠিক রেখে শরীরকে করে তুলে সতেজ। এছাড়া খিদে ভাব কমানো এ বং হজম শক্তি বৃদ্ধিতেও তালশাঁস সাহায্য করে। তালশাঁস দূর করে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা, দেয় লিভারের সুরক্ষা। তালশাঁস ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী্।
বেশি খাওয়া ভাল নয়
কোনো কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। তালশাঁসও তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উচিত। অনেকে লোভ সামলাতে না পেরে এই ফল বেশি খেয়ে ফেলে। এতে দেখা দিতে পারে বেশ কিছু জটিলতা। যেমন, বেশি খেলে পেট গরম হতে পারে, পেটে ব্যথাও করতে পারে। হতে পারে বমি বমি ভাবও। আর যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তাদের তালশাঁস না খাওয়াই উত্তম। এছাড়া যাদের এলার্জি সমস্যা আছে তাদেরও তালশাঁস থেকে দূরে থাকা উচিত।
এনএইচ/